০৬ মে ২০২৪, সোমবার, ০২:৫৯:১২ অপরাহ্ন
রাজশাহীর ইসলামী হাসপাতালে একদিনে চার প্রসূতির মৃত্যু
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৪-২০২৪
রাজশাহীর ইসলামী হাসপাতালে একদিনে চার প্রসূতির মৃত্যু

রাজশাহীতে স্যালাইন দেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে চার নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের এই স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। স্যালাইন দেওয়ার পর অসুস্থ দুই নারী এখনো নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মারা যাওয়া নারীদের মধ্যে দু-একজনের স্বজনদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ম্যানেজ’ করেছে বলে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওই স্যালাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

হাসপাতালের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্প্রতি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে আইভি স্যালাইন দেওয়ার পর ছয়জন নারীর একই রকম শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে তাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাদের কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। হার্টে ব্লক দেখা দেয়। এতে চার নারীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে দুজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সানাউল হক মিয়াকে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হাসপাতালের ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেনকে শুক্রবার তার অফিসে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে কমিটি হয়েছে। তারা কাজ করছেন।’ মৃত নারীদের নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে ইলিয়াস হোসেন বলেন, তিনি ব্যস্ত আছেন। পরে কথা বলবেন। তবে এরপর তাকে অসংখ্যবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুলতানা নাজনীন রিতার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তে গঠিত ছয় সদস্যের কমিটির প্রধান, হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘স্যালাইন দেওয়ার পর কয়েকটি রোগীর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। আমরা শুধু আসমা খাতুনের ব্যাপারটা তদন্ত করছি। ওই স্যালাইনটা আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ঘটনাটি শুনলাম, সেটাও অন্য মাধ্যমে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা সব তথ্য চেয়েছি হাসপাতাল থেকে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। হাসপাতালের গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগকে ঘটনাটি না জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্যায় করেছে। এটা খুবই স্পর্শকাতর ব্যাপার। আমাদের জানানো উচিত ছিল। আমরা জানতে পারলে আমাদের মতো করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তারা কেন আমাদের কাছে এটা গোপন করেছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’

শেয়ার করুন