রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষকদের দলাদলি, ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের অপব্যবহার এবং শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আম্মার।
রোববার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের একটি বড় অংশকে ‘বেতনভুক্ত কর্মচারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ বাতিল বা সংশোধনের দাবি জানান।
পোস্টে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ইস্যুতে নীরব থাকলেও ৭৩-এর অধ্যাদেশে দেওয়া ক্ষমতা ও সুবিধা বাতিলের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রতিবাদে মুখর হন। তার ভাষায়, “মুজিবের ছবি রাখবেন না, নাম রাখবেন না—কিন্তু তার দেওয়া সুবিধা ভোগ করে যাবেন—এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষক’ নামক পদে বেতনভুক্ত কর্মচারীদের চরিত্র।”
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ‘শিক্ষক নিয়োগ নয়, ভোটার নিয়োগ’ বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যেই অধিকাংশ নিয়োগ দেওয়া হয়।
৭৩-এর অধ্যাদেশের সেকশন ৫৫ উল্লেখ করে রাকসু জিএস বলেন, আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকরা দলীয় রাজনীতি করতে পারেন না। অথচ বাস্তবে শিক্ষক সমিতিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা, শিক্ষার্থী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং দলীয় স্বার্থে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার মতো কর্মকাণ্ড নিয়মিত ঘটছে।
সালাহউদ্দিন আম্মার আরও অভিযোগ করেন, অধ্যাদেশ অনুযায়ী নৈতিক স্খলন ও অদক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বরখাস্তের বিধান থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। তার দাবি, নৈতিকতা, দক্ষতা ও অধ্যাদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে অধিকাংশ শিক্ষকই প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি বলেন, “আওয়ামীপন্থি, বিএনপিপন্থি, জামায়াতপন্থি শিক্ষক ছাড়া শিক্ষাপন্থি শিক্ষক কয়জন—তালিকা দিলে আমি তাদের দুয়ারে গিয়ে দোয়া নিয়ে আসবো।”
পোস্টের শেষাংশে সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি ৭৩-এর অধ্যাদেশে দেওয়া “অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা ও অযৌক্তিক সুবিধা” পরিত্যাগের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে অধ্যাদেশ পরিবর্তনের দাবি অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

