০১ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার, ১২:২৭:০০ অপরাহ্ন
জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নামে শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ নিলেন এসিল্যান্ড
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-১০-২০২৫
জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নামে শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ নিলেন এসিল্যান্ড

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, সরকারি খাল উদ্ধারে ভুক্তভোগীর অর্থ আত্মসাৎ ও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।


অভিযোগ করেছেন উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের উত্তর কেবলনগর কাজী কান্দি চটান জামে মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি জাজিরা মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) লিয়াকত হোসেন।


লিয়াকত হোসেন জানিয়েছেন, তার পৈত্রিক বাড়ি ও পিতার ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন তার চাচাতো ভাই রাজ্জাক বেপারী গং। জমি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তিনি শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসানকে।


ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ভূমি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জমি বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে তার কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে শিক্ষক লিয়াকত হোসেন বাধ্য হয়ে ৮০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর ভূমি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি নিজ খরচে এক্সেভেটর মেশিন ভাড়া করে সরকারি খাল উদ্ধার করেন। কিন্তু কাজ শেষের পর খরচ পরিশোধ ও জমি বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখেননি ভূমি কর্মকর্তা।


শিক্ষক লিয়াকত হোসেন বলেন, “আমি ভেবেছিলাম সরকারি কর্মকর্তার সাহায্যে জমি ফিরে পাবো। কিন্তু উল্টো এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন তিনি। আমি ৮০ হাজার টাকা দেই এবং তার কথায় নিজ খরচে খাল উদ্ধার করি। এখন তিনি জমি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না, খরচও ফেরত দিচ্ছেন না।”


তিনি আরও অভিযোগ করেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তার বিপক্ষ দলের লোকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে যোগসাজশে প্রতিবেদন আটকে রেখেছেন।


এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।


অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, জয়নগর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা লিটনও মেহেদী হাসানের নামে অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাজিরার এক বাসিন্দা বলেন, “জাজিরায় এখন এমন কোনো ইউনিয়ন নেই, যেখানে টাকা ছাড়া ভূমি অফিসে কাজ হয়। আগের কর্মকর্তাদের সময় এমন ছিল না।”


যোগাযোগ করা হলে জাজিরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি ওই শিক্ষক কেন তার নামে অভিযোগ দিয়েছেন, এ কারণে ‘তার ফল ভোগ করতে হবে’ বলে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সূত্রঃ ইত্তেফাক

শেয়ার করুন