বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তার পরিবারের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যা দেশের সবার জন্যই উদ্বেগের বিষয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই তার চিকিৎসার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ খালেদা জিয়াকে সরকার রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিআইপি) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেশে ও প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সব বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিরাপত্তা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পর্যবেক্ষণের প্রতিটি ধাপ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচনে একে অপরকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখবেন, শত্রু হিসেবে নয়। ভোট ডাকাতদের জনগণের শত্রু উল্লেখ করে তিনি ভোটাধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল আনা হয়েছে, যা কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত থেকে নয়, বরং দক্ষতা ও পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে করা হয়েছে।
ভাষণে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ’ জাতির ভবিষ্যৎ পথচলার একটি ঐতিহাসিক দলিল। এ সনদে প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়নে জনগণের মতামত নেওয়ার জন্যই গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে। একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে এই প্রথমবারের মতো লাখ লাখ প্রবাসী পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়া আরও বিস্তৃত হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পৃথক সচিবালয় গঠন করা হয়েছে, যা বিচারব্যবস্থা সংস্কারের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ফলে বিচার বিভাগ রাজনৈতিক চাপমুক্ত হয়ে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

