১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১২:২৬:৫১ অপরাহ্ন
স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও জাতি নিরাপত্তাহীন, অর্থবহ স্বাধীনতার সংগ্রাম চলবে: চরমোনাই পীর
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১২-২০২৫
স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও জাতি নিরাপত্তাহীন, অর্থবহ স্বাধীনতার সংগ্রাম চলবে: চরমোনাই পীর

স্বাধীনতার ৫৫তম দিবসেও জাতি জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। তিনি বলেন, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।

মঙ্গলবার বিজয় দিবস উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

চরমোনাই পীর বলেন, “স্বাধীনতার ৫৫তম দিবসেও যদি মানুষ তার জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকে, তাহলে সেটাকে প্রকৃত স্বাধীনতা বলা যায় না।” একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের আত্মত্যাগের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা না করলে সেই ত্যাগ অর্থবহ হয় না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুযায়ী একাত্তরে মানুষ যুদ্ধ করেছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। আর মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেক্ষাপট ছিল মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।

চরমোনাই পীর বলেন, “আমরা একটি আলাদা ভূখণ্ড ও পতাকা পেয়েছি, কিন্তু এগুলো স্বাধীনতার প্রতীক— প্রকৃত স্বাধীনতা নয়।” প্রকৃত স্বাধীনতা তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে যখন আয় বৈষম্য, সুযোগের বৈষম্য ও মর্যাদার বৈষম্য দূর হবে, খুন-গুম ও নিপীড়ন বন্ধ হবে, সুবিচার নিশ্চিত হবে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “এত রক্ত ও জীবন উৎসর্গের বিনিময়ে আমরা কি কেবল প্রতীকী স্বাধীনতাই পেলাম?” ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একাত্তরের বিজয়কে অর্থবহ করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

চরমোনাই পীর বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট দেশের জন্য নতুন একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ ৫৪ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরকার গঠনের সুযোগ পেলে আয় বৈষম্য দূর করা, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, খুন-গুম ও নির্যাতন বন্ধ এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ১৬ ডিসেম্বর সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এটি প্রকারান্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল, যা ভুল ও নিন্দনীয়।” প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ক প্রত্যাশা করলেও বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, কোনো সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ এমন বক্তব্য দিতে পারে না।

ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরের সভাপতি ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ। বিশেষ বক্তা ছিলেন ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ইমতেয়াজ আলম। সভায় কেন্দ্রীয় ও মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন