১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার, ০৬:৪৩:০৮ অপরাহ্ন
দাফনের মুহূর্তে আজানের শব্দে নড়ে উঠলো নবজাতক, পরিবার পলাতক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৯-২০২৫
দাফনের মুহূর্তে আজানের শব্দে নড়ে উঠলো নবজাতক, পরিবার পলাতক

চাঁদপুরে এক নবজাতককে ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, জীবিত ওই নবজাতককে মৃত দাবি করে পৌর কবরস্থানের কবর খোদককে দিয়ে যায় অজ্ঞাত এক পুরুষ। তবে দাফনের মুহূর্তে আজানের শব্দে নড়ে উঠে শিশুটি। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে।


যদিও সবরকম চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। সর্বশেষ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে দুপুরে চাঁদপুর শহরের পৌর কবরস্থানে জীবিত নবজাতককে দাফন করতে রেখে পালিয়ে যায় এক যুবক। 


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে দিকে ওই নবজাতককে কার্টনে (বাক্স) ঢুকিয়ে নিয়ে আসে অজ্ঞাত এক যুবক। এসময় শিশুটি নিথর ছিল এবং ওই যুবক জানায় শিশুটি মৃত। নবজাতকটিকে দাফনের পরামর্শ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ওই যুবক। পরে দাফনের আগ মুহূর্তে আজান দিলে নড়েচড়ে উঠে শিশুটি। খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা নবজাতককে শহরের ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যান এবং দ্রুত এনআইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। 


এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। ফেসবুকে অসংখ্য মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে হাসপাতালে ভিড়ও জমিয়েছিলেন। 


পৌর কবরস্থানের কবর খোদক শাহজাহান জানান, দুপুরে ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত পুরুষ ব্যক্তি একটি কার্টনে করে শিশুকে দিয়ে যায়। শিশু মৃত, তাই দ্রুত কবরস্থ করার পরামর্শ দিয়ে যান তিনি। পরে দাফনের পূর্বে আজান দিলে নড়েচড়ে উঠে শিশুটি। খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা নবজাতককে শহরের ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যান এবং দ্রুত এনআইসিইউতে ভর্তি করানো হয়।


স্থানীয়রা বলছেন, কবরস্থানের আশপাশে থাকা সিসি ক্যামেরা ও কাছাকাছি থাকা হোটেলের ফুটেজ পরীক্ষা করলে নবজাতককে ফেলে যাওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এ অমানবিক কাজে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। 


ফেমাস স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড ট্রমা সেন্টারের এইচআর এডমিন কামরুল ইসলাম জুগলু বলেন, মূলত স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন এবং তারা আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ছেলে নবজাতকটিকে আমরা তাৎক্ষণিক এনআইসিইউতে রেখে চিকিৎসা শুরু করি। এই নবজাতকের সকল দায়িত্ব হাসপাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহিন নিয়েছেন। তবে সবরকম চেষ্টা করেও শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। 


হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার (এনআইসিইউ) ডা. ছোটন মিয়াজী জানান,  শিশুটির ওজন ৮০০ গ্রাম। আজই (রোববার) জন্ম হয়েছে। প্রথমে অক্সিজেন লেভেল কম ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। 


চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি বাহার মিয়া বলেন, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয়সহ সবার অনুরোধ ও পরামর্শ অনুযায়ী ময়নাতদন্ত করা হয়নি। রোববার রাতে নবজাতকের জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।


শেয়ার করুন