১৩ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ০৩:৪৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
যুদ্ধবিরতি বজায় থাকলেও পরাজয় মানতে পারছে না ভারত: ইসহাক দার
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৫
যুদ্ধবিরতি বজায় থাকলেও পরাজয় মানতে পারছে না ভারত: ইসহাক দার

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার শুক্রবার বলেছেন, পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে সামরিক পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে, তবে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ফল মেনে নিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব।


শুক্রবার (১১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।


শুক্রবার কুয়ালালামপুরে আসিয়ান ফোরামের ফাঁকে পাকিস্তান হাইকমিশনের এক অনুষ্ঠানে দার বলেন, ‘পাকিস্তান-ভারত সামরিক যুদ্ধবিরতি ঠিকমতো চলছে, কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা মেনে নিতে পারছে না।’


তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু করেছিল ভারত, আর শেষ করেছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানিয়ে। সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, ভারত যুদ্ধবিরতি চায়।’


উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও গোলাবর্ষণ নিয়ে চার দিনব্যাপী তীব্র সংঘর্ষ হয়, যা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র লড়াইয়ে রূপ নেয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। তবে ভারত দাবি করেছে, এ যুদ্ধবিরতি কোনো মার্কিন মধ্যস্থতা বা বাণিজ্য আলোচনা স্থগিতের হুমকির কারণে নয়।


দার জানান, ভারতের আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনয়ানুম মারসুস’ নামে বড় পরিসরের সামরিক অভিযান চালিয়ে একাধিক ভারতীয় সামরিক অবস্থানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।



তিনি দাবি করেন, এ সংঘর্ষে পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে চারটি রাফাল জেট রয়েছে, ভূপাতিত করেছে।


৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণকালে দার ভারতের ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ বাতিলের সিদ্ধান্তকে উসকানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘ভারত পাকিস্তানের পানি থামাতে বা দিক পরিবর্তন করতে পারবে না... নয়াদিল্লি ক্রমেই বৈশ্বিক পর্যায়ে একঘরে হয়ে পড়ছে। তাদের আগ্রাসী নীতির কারণে ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।’


অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রসঙ্গে দার বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে উড্ডয়ন করেছে, এখন আমাদের লক্ষ্য পাকিস্তানকে জি-২০ তে অন্তর্ভুক্ত করা।’


এর আগে শুক্রবার দার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। দার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে মালয়েশিয়ার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।


প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমও উষ্ণ অভিবাদন জানিয়ে অক্টোবর মাসে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজকে মালয়েশিয়ায় স্বাগত জানানোর প্রত্যাশা প্রকাশ করেন।


দার মালয়েশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বাস্তব পদক্ষেপের প্রশংসা করেন, যা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর গত বছরের পাকিস্তান সফরের ধারাবাহিকতা।


৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম মন্ত্রীপর্যায়ের এ বৈঠকে ২৭টি সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা এবং আসিয়ান মহাসচিব এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করছেন। বৈঠকের লক্ষ্য হলো গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা।


কুয়ালালামপুরে অবস্থানকালে দার মালয়েশিয়ায় প্রবাসী পাকিস্তানি সম্প্রদায়ের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।


প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শের প্রধান বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত।


শেয়ার করুন