০৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াতের ভিজিডি দখল, এনসিপির প্রতিবাদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৭-২০২৫
রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াতের ভিজিডি দখল, এনসিপির প্রতিবাদ

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদে ঝুঁকিপূর্ণ নারী উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ড বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য বুধবার জাতীয় নাগরিক পাটির (এনসিপি) নেতারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় যান। তবে কোনো সমাধান ছাড়াই তাঁরা ফিরে এসেছেন।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডির কার্ড ৪০০টি। এ জন্য আবেদন করেছেন ১ হাজার ৬৫৭ জন। ভিজিডির কার্ডের ২২৫টি নিয়েছে বিএনপি, আর জামায়াতে ইসলামী নিয়েছে ৯০টি। ওই কার্ড ভাগাভাগির খবর জানতে পেরে গতকাল সকালে ইউএনও এ কে এম নূর হোসেনের কার্যালয়ে যান এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীমা সুলতানাসহ কয়েকজন নেতা–কর্মী।


ইউএনওর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নাকি বেলপুকুর ইউপির সব কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছে। চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এই জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কেন স্বৈরাচারী ব্যবস্থা থাকবে? এ জন্যই আমরা অভিযোগ জানাতে এসেছিলাম।’


শামীমা সুলতানা বলেন, তারা নিজের দলের জন্য ইউএনওর কার্যালয়ে যাননি। অভিযোগ পেয়েছেন, টাকার বিনিময়ে কার্ড বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সেটি সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন যাতে প্রকৃত দুস্থ মানুষ কার্ড পায়।


এদিকে জোর করে পদত্যাগ ও লাঞ্ছনার ভয়ে গতকাল ইউনিয়ন পরিষদের যাননি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যরা যাচাই-বাছাই করে তালিকা ইউনিয়ন কমিটিতে আনার কথা। ইউনিয়ন কমিটি এই তালিকা উপজেলা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাবে। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি। কয়েক দিন ধরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা এসে তালিকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলে তালিকা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। আমি ইউএনওকে বলেছিলাম লটারি করার জন্য। এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম ইউএনওর কাছে যান। তিনি লটারি না করে সমঝোতার মাধ্যমে তালিকা করার অনুমতি নিয়ে আসেন।’


বদিউজ্জামান আরও বলেন, ‘আমি ইউএনওকে আবার লটারি করে দেওয়ার জন্য বলেছি। এখন লটারিই হবে।’


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিজিডি কার্ডের ভাগাভাগিতে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার ও জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলাম জড়িত আছেন। এ সম্পর্কে আবু বাক্কার বলেন, ‘বিএনপির জন্য ২২৫টি কার্ড নিয়েছেন। জামায়াত নিয়েছে ৯০টি। বাকিগুলো চেয়ারম্যান ইউপি, সদস্য ও এনসিপিকে দিতে বলেছি।’


এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হওয়ায় তাঁর ভাষ্য পাওয়া যায়নি।


ইউএনও এ কে এম নূর হোসেন বলেন, ‘কার্ডের যে ভাগাভাগি, সেটা এনসিপি চায় না। সেই দাবি নিয়ে তারা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি, ইউনিয়ন পরিষদ যদি না পারে, তাহলে লটারি হবে। ইউনিয়ন যাচাই-বাছাই কমিটি আমাদের লিখিতভাবে জানালে উপজেলা কমিটি লটারি করার ব্যবস্থা নেবে। তখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’

শেয়ার করুন