১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ০৫:৪৭:২৩ অপরাহ্ন
সময়ের অনেক আগেই ঘটবে মহাবিশ্বের চূড়ান্ত সমাপ্তি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৫-২০২৫
সময়ের অনেক আগেই ঘটবে মহাবিশ্বের চূড়ান্ত সমাপ্তি

মহাবিশ্ব চিরস্থায়ী নয়, এ ধারণা নতুন নয় বিজ্ঞানীদের কাছে। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিজ্ঞানীদের আগের অনুমানের তুলনায় অনেক দ্রুত শেষ হতে চলেছে আমাদের এই মহাবিশ্ব। ডাচ গবেষকদের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, মহাবিশ্ব প্রায় ১০৭৮১০{৭৮}১০৭৮ বছর পর সম্পূর্ণভাবে ‘মরে যাবে’, যা ধারণার চেয়ে অনেক আগেই ঘটবে।


এ গবেষণার ভিত্তি হচ্ছে ‘হকিং রেডিয়েশন’। ১৯৭৪ সালে প্রখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং ধারণা দেন, কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল থেকেও বিকিরণ নির্গত হতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় ব্ল্যাকহোল ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে হতে একসময় সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। হকিং রেডিয়েশন অনেক ধীরগতিসম্পন্ন একটি ঘটনা হলেও এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের বিভিন্ন বস্তু একসময় ‘বাষ্পীভূত’ হয়ে যাবে। 


নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু ব্ল্যাকহোলই নয়, বরং অন্যান্য জ্যোতির্বস্তুও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিলীন হতে পারে। গবেষণাটি মূলত ২০২৩ সালের একটি গবেষণার ধারাবাহিকতা, যেখানে এই বাষ্পীভবনের সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রথম ধারণা পাওয়া যায়। এবার গবেষকরা নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছেন মহাবিশ্বের এই শেষ ধাপে পৌঁছাতে কত সময় লাগতে পারে।


জানা যায়, সাদা বামন তারা, যা মহাবিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বস্তু হিসাবে পরিচিত। সম্পূর্ণ বিলীন হতে সময় লাগবে ১০৭৮১০{৭৮}১০৭৮ বছর। আগের গবেষণায় এই সময় ধরা হয়েছিল ১০১১০০১০{১১০০}১০১১০০ বছর, অর্থাৎ আরও বহুগুণ দীর্ঘ। ফলে এটি এক বিপ্লবী পরিবর্তন। গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ও ব্ল্যাকহোল বিশেষজ্ঞ হেইনো ফাল্কে বলেন, ‘মহাবিশ্বের চূড়ান্ত সমাপ্তি আগের চেয়ে অনেক আগেই ঘটবে বলে মনে হচ্ছে। তবে চিন্তার কিছু নেই, এটি এখনো আমাদের থেকে অসীম দূর ভবিষ্যতের ঘটনা।’


তবে বিভিন্ন বস্তুর ক্ষয়ের হার এক নয়। একটি নিউট্রন তারা বা স্টেলার ব্ল্যাকহোল বিলীন হতে পারে ১০৬৭১০{৬৭}১০৬৭ বছরে, আর একটি মানুষের মতো বস্তু বা এমনকি চাঁদের বিলীন হতে লাগতে পারে ১০৯০১০{৯০}১০৯০ বছর। যদিও এসব বস্তু এর আগেই অন্য কোনো মহাজাগতিক প্রক্রিয়ায় শেষ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।


গবেষণাটি ‘ইউনিভার্স ডিকেইস ফাস্টার দেন থট, বাট স্টিল টেইকস এ লং টাইম’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘জার্নাল অব কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকেল ফিজিক্স’-এ। এটি মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে বিজ্ঞানীদের বাধ্য করেছে, যদিও তা মানবজীবনের জন্য তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি নয়।


শেয়ার করুন