২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৯:২৯:৫১ অপরাহ্ন
খালেদা জিয়ার শরীরে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকও কাজ করছে না: চিকিৎসক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১০-২০২৩
খালেদা জিয়ার শরীরে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকও কাজ করছে না: চিকিৎসক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ভর্তির দুই মাস পূর্ণ হয়েছে আজ। এখনো তার শারীরিক অবস্থা এতোটাই নাজুক যে জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসনকে উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছিল।


এখন সেগুলোতেও কাজ করছে না। যেকোনো সময় তার মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। এমতাবস্থায় তাকে বিদেশ নিয়ে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলছেন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।


রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের কনফারেন্স হলে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ডা. এসএম সিদ্দিকী। 


অসুস্থ খালেদা জিয়াকে আর বাসায় নেওয়ার মতো অবস্থা নেই বলে জানান ডা. সিদ্দিকী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এতটাই নাজুক যে, তাকে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছিল। এখন সেগুলোতেও কাজ করছে না। খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে।


খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য আরও দুই বছর আগেই তাকে দেশের বাইরে নেওয়া উচিত ছিল বলে জানান এসএম সিদ্দিকী। 


তিনি বলেন, এখানকার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসকদের আন্তরিক চিকিৎসায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন। কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। খালেদা জিয়ার ভালো চিকিৎসার এখনো সুযোগ আছে। সেটি দেশের বাইরে। খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতেই হবে। তাকে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া দরকার। দেশের বাইরে এর ব্যবস্থা আছে।


বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চটুকু করেছে। তাদের আর কিছু করার নেই। এখন বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে তাকে বাইরে নিতেই হবে।


প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।


৭৮ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।


গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। আজ তার হাসপাতালে ভর্তির দুমাস পূর্ণ হলো।


এর আগেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১০ জুন রাত পৌনে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।


গত বছরের ১০ জুন গভীর রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। হার্টের দুটি ব্লক এখনো রয়ে গেছে।


এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। গত বছরের ২২ আগস্টও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ পর ২৮ আগস্ট ফের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করানো হয়। দুদিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১ আগস্ট বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।


খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এর পর কয়েক দফা তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।


শেয়ার করুন