০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:১৭:১০ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে গ্রীষ্মের প্রখরতা কাটিয়ে জনজীবনে শীতল বার্তা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১০-২০২২
রাজশাহীতে গ্রীষ্মের প্রখরতা কাটিয়ে জনজীবনে শীতল বার্তা

ক্যালেন্ডারের পাতায় কার্তিক মাস। তবে এরই মাঝে বাইরের আবহাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।

প্রখর রোদে উত্তপ্ত গরমের পর জনজীবনে শীতলতা বয়ে আনতে শুরু করেছে সন্ধ্যার মৃদু বাতাস। শহরবাসীরা শীতের আগাম অনুভূতির ততটা আঁচ না পেলেও, গ্রামীণ এলাকায় গেলেই সন্ধ্যায় প্রকৃতির রূপ বদলের চিত্র ফুঁটে উঠছে।

শীতকাল মানেই যেন বিরাট আয়োজন। ঘরে ঘরে লেপ-কাঁথা রোদে দেওয়া, সবজি বাজারে শীতের বিভিন্নরকম সবজি, ওলিতে গলিতে ব্যাডমিন্টন খেলা, ঘরে-বাইরে হরেক রকমের পিঠার পসরা, ভোর বেলায় খেজুরের গুঁড় নিয়ে হাঁক, সন্ধ্যার আগুন ছোঁয়ানো। এসব যেন একপ্রকার আনন্দ বয়ে আনে ব্যস্ত জীবনে।

এরই মাঝে শহরের বাইরের এলাকাগুলোতে শীতের আগমন ঘটেছে। সন্ধ্যার পর থেকে অনুভূত হচ্ছে শীতল আবহাওয়া।

শুধু তাই নয়, বাজারে শীতের সবজির পাশাপাশি পিঠা-পুলির দোকানপাটের দেখা মিলছে বিভিন্ন স্থানে। বিভিন্ন গলিতে দেখা মিলছে চিতই ও ভাপা পিঠার পসরা সাজানো অস্থায়ী দোকানের। আর ক্রেতারাও ভিড় জমাচ্ছে এসকল পিঠার দোকানগুলোতে।

রাজশাহী মহানগরীর মালোপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে দেখা যায়, ভ্যানগাড়িতে করে ভাপা পিঠা বিক্রি হচ্ছে। ভ্যানগাড়ির ঠিক পাশেই ক্রেতারা ভিড় জমিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

যাদের মধ্যে একজন অর্পিতা দাস। শীতের আগমন নিয়ে কথা বলতেই তিনি বললেন, ‘কেবল মাত্র শীতের আভাস আসছে। আর তাতেই শুরু হয়ে গিয়েছে শীতের আয়োজন। হঠাৎ করে ভাপা পিঠা চোখে পড়ায় কেনার জন্য দাঁড়িয়ে গেলাম। তবে আগের মতো তো আর পিঠাপুলির আসর জমে না। না বাসায় আর না বাইরে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাচ্চারা ফাস্ট ফুড খাবারে অভ্যস্ত। তারা পিঠাপুলির মর্ম বুঝবেনা। আর তাই মা-নানীরাও শখ করে ঘরে আগের মতো আর পিঠাপুলির আয়োজনে মেতে উঠেন না।’

অর্পিতা আরও বলেন, ‘আমরা চাইলে আমাদের যে ঐতিহ্য শীতকালে পিঠাপুলির আয়োজন করা, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেটা আবারও ফিরিয়ে আনতে পারবো।’

আরেকজন ক্রেতা নাহিদ শাহরিয়ার বলেন, ‘ভাপা পিঠা আমাদের বাঙালিদের ঐতিহ্য। এই পিঠা ছাড়া শীতের আগমন চিন্তা করা যায় না। আমি গত ৩ দিন ধরেই এখানে ভাপা পিঠা খেতে আসছি। মৃদু শীতের আমেজের সাথে ভাপা পিঠা সব মিলিয়ে দারুণ এক অনূভুতি।’

পিঠা বিক্রেতা মিলন বলেন, ‘আমি বিকেল ৫টা থেকে ৭টা অবধি মালোপাড়া এলাকায় পিঠা বিক্রি করি। এরপর সাহেব বাজারের আরডিএ মার্কেটের সামনে যাই। প্রতি পিস ভাপা পিঠা বিক্রি করি ১০ টাকায়।’

তিনি আরও জানান, শীত এখনো পুরোপুরি আসেনি। তারপরও ভালোই সাড়া পাচ্ছেন ক্রেতাদের কাছে। তবে তরুণ প্রজন্মের মানুষের চেয়ে মধ্যবয়সীদের কাছে পিঠাপুলির কদর বেশি।

কারণ, বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ফাস্ট ফুড খাবারে আগ্রহ বেশি। তারা শখের বসে মাঝে মাঝে খায়।

গুঁড় ছাড়া শুধু নারিকেল দিয়েও পিঠা তৈরি করেন পিঠা বিক্রেতা মিলন। যারা ডায়বেটিস রোগী তারাও যেন পিঠাপুলির স্বাদ থেকে বাদ না পড়েন সেজন্যই এমন উদ্যোগ তার।

শেয়ার করুন