১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৫:০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
নগরীতে যানজট নিরসনে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল সক্রিয়করণের উদ্যোগ
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১০-২০২৫
নগরীতে যানজট নিরসনে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল সক্রিয়করণের উদ্যোগ

রাজশাহী শহরের যানজট নিরসনে দূরপাল্লার বাসগুলোকে নওদাপাড়া নতুন বাস টার্মিনালে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় টার্মিনালটি পরিদর্শন করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান এসএম তুহিনুর আলম, আরএমপির অতিরিক্ত (ক্রাইম) পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. নূর আলম সিদ্দিকী। এছাড়াও রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হেলাল ও রাজশাহীর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম পাখি।

পরিদর্শন শেষে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন,“রাজশাহীতে প্রতিদিন শত শত দূরপাল্লার বাস শহরে প্রবেশ করে। এতে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে জানজট তৈরি হয়, যাত্রী ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। গত এক বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি যেন নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকেই এসব বাস যাত্রী উঠানামা করে।”

তিনি বলেন,“পরিবহন মালিকদের সুবিধা দিতে আরডিএ বিভিন্ন অবকাঠামোগত কাজ করছে। তবে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি—দূরপাল্লার বাস কাউন্টার শহরের যেকোনো জায়গায় থাকতে পারে, কিন্তু যাত্রী উঠানামা অবশ্যই নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকে করতে হবে। ঢাকা শহরে কাউন্টারে কোনো বাস থাকে না, সব যাত্রী উঠানামা নির্দিষ্ট টার্মিনাল থেকে হয়। রাজশাহীতেও সেটা করা সম্ভব।”

মেট্রোপলিটন কমিশনার আরও বলেন,“আমরা একাধিকবার পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা নানা অজুহাত দিচ্ছেন। কিন্তু এই শহরের যানজট নিরসনের স্বার্থে সবাইকে নিয়ম মানতে হবে।”

এসময় রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এসএম তুহিনুর আলম বলেন,“নওদাপাড়া টার্মিনালটি আধুনিকীকরণের জন্য একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া এখন শেষ পর্যায়ে। আমরা চাই এই টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে।”

তিনি বলেন,“রাজশাহী শহরকে সুন্দর ও যানজটমুক্ত রাখার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি উদ্যোগ। টার্মিনালের সামনে যে দোকানগুলো রয়েছে, সেগুলো ধীরে ধীরে অপসারণ করা হবে। একই সঙ্গে নতুন কাউন্টার, যাত্রী বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে—এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যাতে বাস মালিক ও যাত্রী উভয়েই সুবিধা পান।”

আরডিএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু যানজট কমানো নয়, নওদাপাড়াকে একটি আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনালে পরিণত করা। সেই লক্ষ্যে আমরা পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। তারা মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন। আশা করছি, খুব শিগগিরই দূরপাল্লার সব বাস এই টার্মিনাল থেকেই যাত্রী পরিবহন করবে। আমরা রাজশাহীকে একটি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।”

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হেলাল বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল নির্মাণ করেছে। কিন্তু টার্মিনালের সামনে গড়ে ওঠা দোকানগুলো যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি দাবি করেন,“বর্তমানে টার্মিনালে যাত্রীদের বসার জায়গা, চলাচলের সুব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শৌচাগার ঠিকভাবে চালু হয়নি। এইসব সুবিধা না থাকলে যাত্রীরা কষ্ট পাবেন। এছাড়াও সারাদেশে কোনো টার্মিনালের জায়গায় অবৈধ দোকান নেই। এই দোকানগুলো অপসারণ করা হলে আমরা দূরপাল্লার সব বাস কাউন্টারগুলো এখানেই নিয়ে আসব। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করেই টার্মিনালটি ব্যবহার করা উচিত।”

শেয়ার করুন