সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় যমুনা নদীর ডানতীরের ভাঙন রোধে নির্মিত ৫৫৪ কোটি টাকার সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদবান্দি থেকে বাঐখোলা পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীতীর রক্ষা করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ লাঘবে এই প্রকল্প এলাকাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরিয়েছে।
স্থানীয় পাউবো সূত্র জানায়, প্রকল্পটির নাম ছিল ‘সিংড়াবাড়ি, পাটগ্রাম ও বাঐখোলা এলাকা সংরক্ষণ (১ম সংশোধিত)’।
এটি বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ৫৫৪.৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরকারি বিধিমতে দরপত্র আহ্বান করে মোট ৩৪টি প্যাকেজে ৩৪ জন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কাজ শুরু হয়। যদিও এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প ছিল, তবুও নানা প্রশাসনিক ও বাস্তবায়নজনিত জটিলতায় একাধিকবার সময় বাড়াতে হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিরাজগঞ্জ-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল যমুনার ডানতীরবর্তী এলাকা—আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাস্তাঘাট ও কৃষিজমি—নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা। এখন এসব অবকাঠামো নিরাপদ থাকবে।
তিনি আরও জানান, প্রকল্প এলাকার উজান ও ভাটিতে পূর্বে নির্মিত নদীতীর প্রতিরক্ষামূলক অবকাঠামো যাতে আউটফ্ল্যাঙ্ক না হয়, সেদিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের স্থায়িত্ব রক্ষা, নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণ, এবং স্থানীয় মানুষের সামাজিক ও আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, কাজটি কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এতে এই এলাকার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো নদীভাঙনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে। জনগণের মধ্যে ইতোমধ্যেই স্বস্তি ফিরে এসেছে।
তিনি জানান, প্রকল্পের কাজ গত জুন মাসে সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং এটি এখন জনকল্যাণে সেবা দিচ্ছে।