২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ০২:৪৭:৩০ পূর্বাহ্ন
‘৬ মাস আগে বিয়ে করেন তৌকির, ছিলেন অমায়িক-ভদ্র’
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৭-২০২৫
‘৬ মাস আগে বিয়ে করেন তৌকির, ছিলেন অমায়িক-ভদ্র’

রাজধানীর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির আহমেদ ছয় মাস আগে বিয়ে করেছিলেন। ছাত্রজীবনে অনেক মেধাবী ছিলেন তিনি। তার আচরণ ছিল খুবই অমায়িক ও ভদ্র-নম্র। সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর উপশহরে তৌকিরের মামা ও তার সাবেক এক প্রশিক্ষক এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ২২৩ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকেন তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন এবং ছোট বোন সৃষ্টি খাতুন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তৌকির ছিলেন বড়। তার একমাত্র ছোট বোন সৃষ্টি খাতুন রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।


তৌকির রাজশাহীর গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি ওই কলেজের ৩৪তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে তৌকির যোগ দেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে। বিয়ে করেন মাস ছয়েক আগে। তৌকিরের স্ত্রী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। ঢাকায় থাকতেন তিনি।

রাজশাহীর উপশহর এলাকার বাসিন্দারা জানান, তৌকির খুবই ভদ্র ও মেধাবী ছিলেন। স্থানীয় এক যুবক বলেন, তৌকির স্যার গত কুরবানি ঈদে এসেছিলেন। এত ভালো ব্যবহার তার, খুবই অমায়িক মানুষ ছিলেন স্যার।

পাইলট তৌকিরের মামা রফিকুল ইসলাম বলেন, তৌকিরের মতো এরকম ভালো ছেলে আমি আর দেখিনি। খুবই পরিশ্রমী, ভদ্র ও মেধাবী ছিল তৌকির। তাকে এভাবে হারিয়ে ফেলব, তা কখনও ভাবিনি।

তৌকিরের মৃত্যুর খবর শুনে রাজশাহী নগরীর ভাড়া বাসায় ছুটে আসেন পাবনা ক্যাডেট কলেজে তার সাবেক প্রশিক্ষক মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, তৌকির খুবই মেধাবী, ভীষণ ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। সে ছোটদের স্নেহ করত, বড়দের সম্মান দিত। ওর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।


রাজশাহীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় নগরীর শাহীন ক্যাডেট কলেজে কোচিং করতেন তৌকির। এ কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, তৌকিরের ডাকনাম ছিল সাগর। ছোট থেকেই ছিল অত্যন্ত মেধাবী।

তৌকিরের পরিবারের ভাড়া বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রথম যুদ্ধবিমান চালানোর কথা শুনে তৌকিরের মা-বাবা আনন্দিত ছিলেন। খুব খুশি হয়েছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ দুঃসংবাদ শুনে তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না তারা। বিকেলে তারা হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় রওনা দেন। 

শেয়ার করুন