০৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ০১:৪৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও আলোচনার দরজা খোলা রাখলেন ট্রাম্প
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৭-২০২৫
শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও আলোচনার দরজা খোলা রাখলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এবার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশ। তবে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি আলোচনার পথও খোলা রেখেছেন তিনি।


সোমবার (৭ জুলাই) ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে এসব দেশের ওপর শুল্ক কার্যকর হতে পারে। চিঠিতে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ, বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।


এর আগে গত ২ এপ্রিল ‘লিবারেশন ডে’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববাজারে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর একতরফাভাবে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে সেটি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা এল।


নিউইয়র্কে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক নৈশভোজে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়—শুল্ক আরোপের ১ আগস্ট সময়সীমা কি চূড়ান্ত? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, 'আমি বলব এটা চূড়ান্ত, তবে শতভাগ নয়।'


তিনি আরও বলেন, 'যদি কোনো দেশ ভালো কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসে, এবং সেটা আমার পছন্দ হয়, তাহলে সেই পথেও হাঁটতে পারি।' ট্রাম্পের এমন বক্তব্য দ্ব্যর্থপূর্ণ বার্তা দিলেও সম্ভাব্য বাণিজ্য আলোচনার একটি জানালা খোলা রেখেছে।


শুল্কের হুমকির কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যজগতে চাপে পড়েছে বিভিন্ন দেশ। শেয়ারবাজারেও তার প্রভাব পড়েছে স্পষ্টভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক সূচক ০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে সোমবার রাতেই।


শুল্ক আরোপের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র দেশগুলোর মধ্যে অসন্তোষ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা একে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বলেছেন, 'আমরা আশা করি, একটি পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব।'


এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার ট্রাম্পের পদক্ষেপকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, 'জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাগত মিত্র। এই দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রে বড় আকারে বিনিয়োগ করেছে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত মিত্রদের জন্য এক নেতিবাচক বার্তা বহন করে।'


ট্রাম্পের প্রশাসনের ভেতরে অবশ্য আলোচনার গতি বাড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কয়েকটি ঘোষণা দেবে। অর্থাৎ, আলোচনার দ্বার এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।


শেয়ার করুন