০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ০৯:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন
হজ না করেও হজের সওয়াব মিলবে যেসব আমলে
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৫-২০২৫
হজ না করেও হজের সওয়াব মিলবে যেসব আমলে

হজ ইসলামের অন্যতম রুকন। আর্থিক কষ্টসাধ্য ও প্রচুর ব্যয়সাধ্য এ আমলটি সামর্থ্যবানদের ওপর জীবনে এক বার মাত্র ফরজ। তবে ধনী-দরিদ্র সবার জন্য হজ না করেও হজের সওয়াব অর্জনে রয়েছে অবারিত সুযোগ।


১. দিন শিক্ষা : আল্লাহর রসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিন শিক্ষা করা কিংবা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে মসজিদ (কিংবা কোনো দিন শিক্ষা কেন্দ্র)-এর উদ্দেশে রওয়ানা হবে, তার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ হজের সওয়াব (মুস্তাদরাকে হাকিম : ৩১৫, সহিহ)।


২. নামাজের উদ্দেশ্যে গমন : রসুল (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার ঘর থেকে পরিপূর্ণ পবিত্রতার সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের উদ্দেশে রওয়ানা হলো, সে এহরামধারী হাজির সমান সওয়াব লাভ করবে আর যে ব্যক্তি চাশতের নামাজের উদ্দেশ্যে রওনা হলো, সে ওমরাকারীর সমান সওয়াব লাভ করবে (অবু দাউদ : ৫৫৮, হাসান)।’


৩. ইশরাকের নামাজ : রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করল, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত নামাজের স্থানে বসে আল্লাহর জিকিরে লিপ্ত থাকল, এরপর নামাজের ওয়াক্ত হলে দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, তার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সওয়াব (তিরমিজি ৫৮৬, হাসান)।’


৪. মসজিদে কুবায় নামাজ আদায় : রসুলে করিম (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার ঘর থেকে পরিপূর্ণ পবিত্র হয়ে কুবা মসজিদে আগমন করবে, অতঃপর সেখানে যে কোনো নামাজ আদায় করবে, তার জন্য রয়েছে একটি ওমরার সমান সওয়াব (ইবনে মাজাহ : ১৪১২, সহিহ)।’


৫. এশা ও ফজরের জামাত : সাহাবিগণ আল্লাহর রসুল (স.)-এর কাছে অনুযোগ করলেন, বিত্তশালীরা আমলে এগিয়ে যাচ্ছে... তখন আল্লাহর রসুল বললেন, ‘এমন নয় কি যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য এশার জামাতকে হজের সমান এবং ফজরের জামাতকে ওমরার সমান করেছেন? (আহমাদ ও নাসাঈ)।’


৬. বিশেষ তাসবিহ-তাহলিল : ফরজ নামাজের পর ৩৩ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার "দরিদ্র সাহাবিগণ অনুযোগ করলেন, বিত্তশালীরা ফজিলতে এগিয়ে যাচ্ছেন... তারা হজ, ওমরা করতে পারছেন... তখন আল্লাহর রসুল (স.) তাদের বললেন, যদি তোমরা এ আমলটি করো, তাহলে তোমরা তাদের সমান হবে এবং কেউ তোমাদের সমান হতে পারবে না। তাহলে তোমরা প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলবে। (সহিহুল বুখারি : ৮৪৩, সহিহ মুসলিম : ৫৯৫)।


৭. মা-বাবার খেদমত : এক ব্যক্তি আল্লাহর রসুলের কাছে এসে বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ (স.) আমি জিহাদে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা করছি কিন্তু আমার সে সামর্থ্য নেই! নবিজি (স.) বললেন, ‘তোমার পিতামাতা কেউ কি জীবিত আছে?’ সে বলল, ‘আমার মা জীবিত আছেন।’ তখন আল্লাহর রসুল (স.) বললেন, ‘তুমি তার প্রতি সদাচরণে মনোযোগী হও, তবে তুমি হজ আদায়কারী, ওমরা আদায়কারী এবং মুজাহিদের সমান সওয়াব লাভ করবে (ত্ববরানি, আল মুজামুল আওসাত : ২৯১৫, হাসান)।’


৮. জিলহজের প্রথম দশ দিনের আমল : সুরা আল ফাজরের প্রথম তিনটি আয়াতে জিলহজের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত আলোচিত হয়েছে। সহিহুল বুখারির ২৬ এবং ৯৬৯ নম্বর হাদিসের আলোকে মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন, জিলহজের প্রথম ১০ দিনের আমলের ফজিলত হজ ওমরার চেয়েও বেশি


আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে জীবনে এক বার হলেও বাইতুল্লাহ জিয়ারত নসিব করুন এবং প্রতিদিন আমাদেরকে হজের ফজিলতসম্পন্ন আমলগুলো প্রতিপালনের তাওফিক দান করুন, আমিন।


শেয়ার করুন