সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জুবাইদা রহমানের আপিল মঞ্জুর করে বুধবার (২৮ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এ রায়ের ফলে তারেক দম্পতির বিরুদ্ধে এ মামলার কোনো অভিযোগ, দণ্ডাদেশ বা সাজা আর থাকছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা।
মামলায় ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। আর তারেক রহমানকে সহযোগিতা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে। পরের বছরই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেওয়া হয়।
দুদক আইনের দুটি ধারায় (২৬(২) ও ২৭(১) ধারা) তারেক রহমানকে ৯ বছর এবং জুবাইদা রহমানকে দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন পেশায় চিকিৎসক জুবাইদা রহমান। ১৭ বছর পর শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। এর পরই তিনি মামলাটির বিরুদ্ধে আপিল করার উদ্যোগ নেন।
এর জন্য তিনি গত ১৩ মে হাইকোর্টে বিলম্ব মার্জনা চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে আপিলের অনুমতি দেন। এ ক্ষেত্রে তার ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করা হয়। পরের দিনই তিনি আপিল করেন। সঙ্গে জামিন আবেদনও করা হয়।
ওই দিনই আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেন। আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়। এরপর আপিল শুনানি শুরু হয়। গত ২৬ মে শুনানির পর আপিলটি রায়ের জন্য রাখেন আদালত। তবে বুধবার ফের শুনানি হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করলেও তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের করা আপিলে বিচারের সুবিধা পাবেন কি না, তার নজির তুলে ধরেন আইনজীবীরা। এরপর রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে তারেক-জুবাইদার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও কায়সার কামাল ও আইনজীবী মো. জাকির হোসেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল করিম।
যদিও গত ২২ সেপ্টেম্বর এই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে অন্তর্বর্তী সরকার। বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে আপিল করার শর্তে সাজা স্থগিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।