এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতার এপিসিতে ওঠার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বুধবার রাতে এ নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন।
‘গোপালগঞ্জ থেকে এপিসিতে ওঠানোর দায় আমিসহ কয়েকজনের’ শিরোনামে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
আরিফুর রহমান তুহিন তার পোস্টে বলেন, ‘আর্মি যখন আমাদের রেসকিউ করতে আসে তখন বাহিরে, চলছে গুলি ও ককটেল হামলা।
আর্মির সাফ কথা, তারা ফেস বাই ফেস সবাইকে এপিসিতে করে নেবে। তাদের অর্ডার। অন্যদিকে নাহিদ ও হাসনাত জানিয়ে দেয়, সবাই একত্রে যাব এবং গাড়িতে। এগুলো নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা দেনদরবার চলে।
এরপর সবাই নিচে নামি।’
তিনি বলেন, ‘তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও সামরিক কর্মকর্তা আমাকে জানান [যেহেতু আমিসহ কয়েকজন উনাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন রাখছিলাম] শীর্ষ নেতারা জাতীয় সম্পদ, সেহেতু অন্তত উনাদের এপিসিতে দেন। এই নিয়ে নিচেও অনেকক্ষণ ঝামেলা হয় এবং আমি ও ওয়াহিদ এক প্রকার জোর করে উনাদের এপিসিতে তুলে দিই। সেখান থেকে আবারও নাহিদ ও হাসনাত নেমে যায়।
সুঠাম দেহের হাসনাতকে ও নাহিদকে দ্বিতীয়বার ধস্তাধস্তি করেই এপিসিতে উঠাই।’
তুহিন বলেন, ‘বহর বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাহিদ যে গাড়িটায় করে আসছিলেন ওটাকে লক্ষ্য করে ককটেল, গুলি ও ইট-পাটকেল মারে। এতে অনেকগুলো গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং অনেকে আহত হন। অনেক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও আহত হন। গোপালগঞ্জ শহর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উনারা নেমে আবার যার যার গাড়িতে উঠেন।
ততক্ষণে গুলি করা কমেছে। তবে ইটপাটকেল অব্যাহত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বহরের একটা গালিতে গুলি লাগে এবং চাক্কা পাংচার হয়ে যায়। দুইটা ঘাড়ি ঝাঁজরা হয়ে যায়। প্রশাসনের ব্যাকআপ নিয়ে আর কিছু বললাম না। তারা মনে হয় শুরুতে চাইছিল হাসনাতরা মরে যাক।’
এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘অনেকেই দেখছি হাসিনার হামলাকে ছাপিয়ে এই এপিসিতে ওঠাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কয়েক হাজার অস্ত্রধারীর সঙ্গে আমরা ৪টা ঘণ্টা টিকে ছিলাম সেটা আপনাদের চোখে পড়ল না। এটা সত্যিই দুঃখজনক।’
তিনি বলেন, ‘আমার নেতাদের কাছে যেমন আমাদের জীবন গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের কাছেও তাদের জীবন আমাদের জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আপনাদের নেতাদের মতো উন্নত মানের গাড়ি ও দুই ডজন সিকিউরিটি ফোর্স নিয়ে ঘুরি না। আমাদের নেতারা বহরে হায়েস, নোয়াহ গাড়িতে আমাদের সঙ্গে চড়েন। যেগুলোতে সামান্য ইট পড়লেও কাচ ভেঙে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ্য ছিল নাহিদ-আখতার-হাসনাতরা—এটা তো সহজেই অনুমেয়। সুতরাং আমরা আমাদের নেতাদের জীবন বাঁচাতে যা দরকার সেটা করেছি। আপনারা একটা সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাপিয়ে এপিসি নিয়ে পড়ে থাকবেন জানলে সবাই ওইখানেই মরে যেতাম। ভালো থাকবেন আমাদের ওইসব বন্ধুরা।’