১৯ মে ২০২৫, সোমবার, ০২:১৯:০৬ অপরাহ্ন
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে পোস্ট, গ্রেফতার ভারতীয় অধ্যাপক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৫-২০২৫
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে পোস্ট, গ্রেফতার ভারতীয় অধ্যাপক

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার জেরে আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ।‘নারী সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে কটাক্ষ’ ও ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো’র অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 


কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


অধ্যাপক মাহমুদাবাদ গত ৮ মে এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমি খুশি যে অনেক ডানপন্থি বিশ্লেষকেরা কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তবে একইভাবে তারা যদি গো হত্যার অভিযোগে গণপিটুনির শিকার, ইচ্ছেমতো বাড়িঘর ভাঙার ও বিজেপির ঘৃণানীতির শিকার সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তার দাবি করতেন, তাহলে সেটা আরও বেশি অর্থবহ হতো। দুই নারী সেনা কর্মকর্তার প্রেস ব্রিফিং অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি চিত্র, তবে বাস্তব পরিবর্তন না এলে তা শুধুই লোক দেখানো।’


তার এই পোস্টকে ঘিরেই শুরু হয় বির্তক।  হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশন তাকে ‘নারী সেনা কর্মকর্তাদের অপমান’ ও ‘সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো’র অভিযোগে তলব করে এবং ২৩ মের মধ্যে হাজিরা না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয়।



তবে অধ্যাপক মাহমুদাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বক্তব্যে কোথাও নারীবিদ্বেষ নেই; বরং আমি সাধারণ নাগরিক ও সেনাদের সুরক্ষা নিয়েই কথা বলেছি।’ 


তিনি  বলেন, তার পোস্টের বক্তব্যকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করা হয়েছে।


সমাজকর্মী শবনম হাশমি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘আজ অধ্যাপক মাহমুদাবাদকে হরিয়ানা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তার পোস্ট পড়লে দেখা যাবে, সেখানে কিছুই দেশদ্রোহ বা নারীবিরোধী নয়। এটি নিছক হয়রানি।’


দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন সংস্করণ’ অর্থাৎ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ উসকে দেওয়া’, ‘বিদ্রোহে প্ররোচনা’ ও ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ করার ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।


তবে মাহমুদাবাদের আইনজীবীরা বলছেন, এগুলো ভিত্তিহীন অভিযোগ। পোস্টে তিনি সংবিধানসম্মত মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করেছেন।



এদিকে অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিবাদে ভারতের ১ হাজার ১০০ জনের বেশি শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অধিকারকর্মী একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে এই সমন প্রত্যাহার এবং হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রকাশ্য ক্ষমা দাবি করেছেন।


বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হরিয়ানা ভারতের নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় অন্যতম শীর্ষ রাজ্য। সেসব মোকাবিলা না করে হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশন অহেতুক একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে হয়রানি করছে। এটি দেশের সংবিধানিক বাক্স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।


শেয়ার করুন