৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৫:২৫:৪৪ অপরাহ্ন
গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে বেঁচে গেলেও মানবেতর জীবন এই পরিবারের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২৩
গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে বেঁচে গেলেও মানবেতর জীবন এই পরিবারের

গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একমাত্র বসতঘরটি আগুনে পুড়ে গেছে। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে প্রতিবেশীর খোলা বারান্দায় দিন কাটাচ্ছেন এক পোশাকশ্রমিক। আগুনে শুধু বসতঘর নয় সহায়–সম্বল সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে। স্থানীয়দের কিছু সহযোগিতা পেলেও এখনো সরকারি কোনো পায়নি বলে জানিয়েছে পরিবারটি।


সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলার গাজীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে মাহবুবুল আলম শামীম একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর বসতবাড়িটি গত রোববার বিকেলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শুধু থাকার ঘর নয়, ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। রান্না করে খাওয়ার মতো হাঁড়িপাতিল, জামাকাপড় কিছুই অবশিষ্ট নেই। এতে অবুঝ দুই শিশুসহ পরিবারের চার সদস্য প্রতিবেশীর খোলা বারান্দায় দিনে কাটাচ্ছেন। চারপাশ খোলা বারান্দাটিতে আশপাশের মানুষ একটি পলিথিনের ছাউনির মতো টাঙিয়ে দিয়েছেন।


গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশী আসাদুল্লাহর একটি মাটির ঘরের বারান্দায় দুই শিশু সন্তান নাদিম মাহমুদ (১১) ও নোমানকে (৩) নিয়ে জেগে রয়েছেন পোশাক শ্রমিক শামীম ও তাঁর স্ত্রী। একটি পাটি মাটিতে বিছিয়ে একটি কম্বলের ওপর শুইয়ে রেখেছেন শিশু দুটিকে।


বারান্দায় বসে কথা হয় ভুক্তভোগী শ্রমিক মাহবুবুল আলম শামীমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই আমার স্ত্রী নাসিমা বেগম ঘরে বসে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে রান্না করছিলেন। রান্না বসিয়ে আমার স্ত্রী বাচ্চার কান্না শুনে ঘরের বাইরে আসে। তখন হঠাৎ করে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দ হয়ে ঘরের ভেতর আগুন জ্বলতে থাকে। এক নিমেষেই সমস্ত ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘরটা পুড়ে যায়। ঘরের ভেতর থাকা সমস্ত আসবাবপত্রও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

এই পোশাক শ্রমিক আরও বলেন, ‘আগুনে বসতঘরসহ সব পুড়ে গেলেও আমার দুই অবুঝ শিশুকে বাঁচিয়ে রেখেছে আল্লাহ। ওঁরা এ সময় বাড়ির বাইরে খেলাধুলা করছিল। তাদের কান্নার শব্দ শুনে আমার স্ত্রী দৌড়ে বাইরে আসায় সেও প্রাণে বাঁচতে পারে। তবে অবুঝ দুই শিশু সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। খেজুর পাতার পাটিটাও মানুষের দেওয়া। বাচ্চাদের গায়ের জামাকাপড়, আমার জামাকাপড় ও স্ত্রীর পড়নের শাড়ি সবই মানুষের দান। খুবই কষ্ট সময় কাটছে। কী করে ঘরের ওপর ঢেউটিনের চাল দেব? কোথায় পাব এত টাকা। এ নিয়ে চারপাশে অন্ধকার দেখছি। দিনে যেমন-তেমন রাত হলেও খুবই কষ্ট। আমার তেমন সহায় সম্বল নেই যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘরবাড়ি ঠিক করব। বাবার রেখে যাওয়া ভিটেমাটি একমাত্র সম্বল। মানুষ পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করলেও কষ্ট লাঘব হবে আমার পরিবারের। আপনাদের মাধ্যমে সহযোগিতা চাচ্ছি।’


শেয়ার করুন