১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৩:১৫:৪৭ অপরাহ্ন
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৯-২০২৫
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কয়েক সপ্তাহ পর এবার বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।


বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাধা নিরসনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার কিছু ঘণ্টা পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করে একটি উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।


ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, 'আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাধাগুলো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। আমি আগামী সপ্তাহগুলোতে আমার খুব ভালো বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি। আমি নিশ্চিত যে আমাদের দুটি মহান দেশের জন্য একটি সফল সমাধানে পৌঁছাতে কোনো সমস্যা হবে না।'


প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পোস্টের জবাবে মোদি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, 'ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্বাভাবিক অংশীদার। আমি নিশ্চিত যে আমাদের বাণিজ্য আলোচনা ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের সীমাহীন সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে। আমাদের দলগুলো যত দ্রুত সম্ভব আলোচনা শেষ করতে কাজ করছে। আমিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি। আমরা আমাদের জনগণের জন্য একটি উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করব।'


বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমনের এই ইঙ্গিত আসছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন বাজারে ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং কর্মসংস্থান হ্রাসের শঙ্কা করছেন। এই চাপ কমাতে ভারত সরকার একটি আর্থিক প্যাকেজ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে, যা উৎপাদনকারীদের নগদ অর্থের সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে।


এদিকে মঙ্গলবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) ব্যবহার করে আরোপিত শুল্ক নিয়ে করা আপিল শুনতে সম্মত হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, নভেম্বরে মৌখিক শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে নিম্ন আদালত আইইইপিএ-ভিত্তিক শুল্ক আরোপকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। এই রায় শুধু ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক নয়, রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ককেও প্রভাবিত করে। তবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক, যা ট্রাম্প ১৯৬২ সালের ট্রেড এক্সপানশন অ্যাক্টের ধারা ২৩২ ব্যবহার করে আরোপ করেছিলেন, সেটি আপাতত আইনি চ্যালেঞ্জের বাইরে রয়েছে।


উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার সূচনা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার পর আগস্টের দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন আলোচকদের ভারত সফর বাতিল হওয়ায় এ আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেয়া ভাষণে মোদি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, মার্কিন কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে চলমান অচলাবস্থার মধ্যেও ভারত তার কৃষক, জেলে ও পশুপালকদের স্বার্থে কোনো আপস করবে না।




শেয়ার করুন