০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার, ০২:০১:১৮ অপরাহ্ন
পাথরকাণ্ড : ডিসি-ইউএনও’র পর এবার ওসি বদলি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৯-২০২৫
পাথরকাণ্ড : ডিসি-ইউএনও’র পর এবার ওসি বদলি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের পাথর লুটের আলোচিত ঘটনার পর এবার বদলি করা হলো কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনানকে। আলোচিত এ ঘটনার জেরে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারকে বদলির পর একই ধরনের পরিণতি হলো ওসি আদনানের। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পরিদর্শক রতন শেখ।


দেশজুড়ে ঝড় তোলা সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের পাথর লুটে নিঃশেষ করার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল এই তিনজনের বিরুদ্ধে।


বিশেষ করে এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে যে ৫২ ব্যক্তি ও সংস্থার নাম উঠে এসেছে তার মধ্যে তাদের নাম ছিল। 

ওসি আদনানকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। যদিও তিনি বলেছেন, ‘নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে কোম্পানীগঞ্জের ওসিকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে পরিদর্শক রতন শেখকে।


ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনানকে সিলেট সদর কোর্টে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার স্থানে নতুন ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে পুলিশ লাইনে ওআর পদে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মো. রতন শেখকে। রতন এর আগে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।


এর আগে গত ১৮ আগস্ট সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি করা হয় এবং কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহারকে বদলি করা হয়।


এ ছাড়া ২৫ আগস্ট সিলেটে পুলিশের ২২ সদস্যকে বদলি করা হয়। তাদের মধ্যে পাথর লুটকাণ্ডে আলোচিত কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত ১১ জন উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আছেন। এরপর রবিবার বদলি হলেন ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় যোগ দিয়েছিলেন ওসি আদনান। থানা এলাকার সামনে দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন হলেও কোনো পুলিশি পদক্ষেপ ছিল না।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন থেকেই প্রশাসনের শিথিলতার সুযোগে শুরু হয় বেপরোয়া পাথর লুট। প্রকাশ্যে প্রশাসনের সামনেই গত এক বছর ধরে লুটে নেওয়া হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র সাদা পাথরের সব পাথর। মাঝেমধ্যে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় কিছুদিন বন্ধ থাকে লুটপাট। তবে জুলাই মাসের শেষভাগে লুটপাট চূড়ান্ত মাত্রা পায়। এরপর মাত্র ১৮ দিনে নিঃশেষ হয়ে যায় সাদা পাথর। হারিয়ে যায় অন্তত দুই শ কোটি টাকার পাথর। 


গত ১০ আগস্ট কালের কণ্ঠ মাল্টিমিডিয়ায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। এরপর থেকে দেশের গণমাধ্যমগুলোর সংবাদ ও ফেসবুকে সারা দেশের নেটিজেনরা সোচ্চার হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। এরপর শুরু হয় পাথর উদ্ধারে অভিযান। পাথর উদ্ধার করে সাদাপাথরে পুনস্থাপনের কাজ শুরু করে প্রশাসন। এ ঘটনায় সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারকে বদলি করা হয়েছে।


শেয়ার করুন