ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনার প্রতিবাদে তেল আবিবে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো ইসরাইলি। শনিবার (৯ আগস্ট) রাতের এই বিক্ষোভে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং জিম্মিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। খবর রয়টার্সের।
এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করবে। নেতানিয়াহুর এ সিদ্ধান্তের ক্রমশও বিরোধিতা বাড়ছে জনমনে। এছাড়া সেনাবাহিনীও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এই পদক্ষেপ জিম্মিদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
নেতানিয়াহুর এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে শনিবার রাতে তেল আবিবের রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার ইসরাইলি। তাদেরই একজন লিশাই মিরান লাভি বলেন, ‘এটি শুধুই সামরিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষদের জন্য মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ’
মিরান লাভি হামাসের হাতে বন্দি জিম্মি ওমরি মিরানের স্ত্রী। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের জন্য হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ইসরাইলি নাগরিক মনে করেন, যুদ্ধ এখনই বন্ধ করা উচিত, যাতে গাজায় আটক প্রায় ৫০ জন জিম্মিকে মুক্ত করা সম্ভব হয়।
ইসরাইলি কর্মকর্তাদের ধারণা, এখনও প্রায় ২০ জন জিম্মি জীবিত রয়েছেন।
ইসরাইলি সরকার দেশ-বিদেশে, এমনকি তার ঘনিষ্ঠ ইউরোপীয় মিত্রদের কাছ থেকেও, গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণের ঘোষণার জন্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা রোববার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত যে জিম্মিরা মুক্তি পেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছেন।
তেল আবিবের উপকণ্ঠ থেকে বিক্ষোভে যোগ দিতে আসা ৬৯ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত রামি দার বলেন, ‘তারা (সরকার) উগ্রপন্থী। তারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে। ’
তিনিও ট্রাম্পের প্রতি জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিশ্চিতের জন্য আহ্বান জানান।
তেল আবিবে প্রায়ই যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির দাবিতে সমাবেশ হয়। হামাসের অক্টোবর ২০২৩-এর হামলার পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধে সরকারের প্রতি চাপ বাড়াতে এই বিক্ষোভগুলো হচ্ছে। শনিবারের এই বিক্ষোভে এক লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আয়োজকেরা।