রাজধানীর পুরান ঢাকায় বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক। এরমধ্যে মহিন ঘটনার মূলহোতা। স্থানীয়রা জানান, নিহত সোহাগ ও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন, টিটুসহ জড়িতরা ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে, তাদের কোনো পদ রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। ওই এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগের হাতে। তবে, এর নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল মহিন ও টিটু নামে আরও দুজন। তারা বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এর জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
ঘটনার দিন ঝামেলা মিটমাটের কথা বলে সোহাগগে বাসা থেকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায় হয়। এরপর সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করা লোকজন সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
জানা গেছে, সোহাগকে হত্যার পর তার নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে কম্পাউন্ডের বাইরের সড়কে এনে শত শত মানুষের সামনে চলে উন্মত্ততা। ঘটনাস্থলের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা লোকদের মধ্যে একজন মোবাইলে কথা বলছিল। ওই সময় সোহাগের রক্তাক্ত মুখের ওপর কিলঘুষি দিতে থাকে আরেকজন। অন্য এক তরুণ দৌড়ে এসে পড়ে থাকা নিথর দেহের বুকের ওপর লাফাচ্ছিল! মানুষজনও দেখছিল এমন ভয়ংকর দৃশ্য।
লালবাগ থানার ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাব্বি গণমাধ্যমকে বলেন, মঈন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। তিনি চকবাজার থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারেন—এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়।
ডিএমপির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মহিন ও তারেক নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান।