জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা সামনে রেখে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষায় নকলসহ যেকোনো ধরনের অসদুপায় অবলম্বন করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর পরীক্ষাটি বাতিলের পাশাপাশি চার বছরের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
শনিবার (৫ জুলাই) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নজরদারি থাকবে।
প্রশ্নফাঁস, নকল বা যেকোনো ধরনের অসাধু কার্যকলাপে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরীক্ষায় অসদুপায় হিসেবে পরীক্ষা কক্ষে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করা ও কথাবার্তা বলা; পরীক্ষাকক্ষে ধূমপান করা; পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা কোনো ইলেকট্রনিকস সামগ্রী বহন; দোষণীয়/অননুমোদিত কাগজপত্র সঙ্গে রাখা; দোষণীয়/অননুমোদিত কাগজপত্র হতে উত্তরপত্রে লেখা; প্রশ্নপত্রে উত্তর লিখা/প্রশ্নপত্রে লেখা উত্তর হতে উত্তরপত্রে লেখা;
পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা কোন ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ব্যবহার করে উত্তরপত্রে লেখা; পরীক্ষা কক্ষের নির্দিষ্ট স্থানের পরিবর্তে অবৈধভাবে অন্য স্থানে আসন গ্রহণ করা; ডেক্স, বেঞ্চ, কাপড়, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, ব্ল্যাকবোর্ড, কক্ষের দেয়াল বা অন্য কিছুতে লেখা এবং সেখান থেকে উত্তরপত্র লেখা; উত্তরপত্রে অস্বাভাবিক, আপত্তিকর কিছু লেখা, অযৌক্তিক কোনো মন্তব্য করা অথবা উত্তরপত্রের মধ্যে টাকা রাখা;
রোল নম্বর পরিবর্তন/পরস্পর রোল নম্বর বিনিময় করা (উত্তরপত্র একে অপরের সঙ্গে পরিবর্তন); মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ / সুবিধা গ্রহণের চেষ্টা করা; মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে অবৈধভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা; পরীক্ষার কক্ষ হতে উত্তরপত্র বাইরে পাচার করা বা বাইরে থেকে লেখা উত্তরপত্র সংযোজন করা; উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠা পরিবর্তন করা; ইনভিজিলেটরের কাছে উত্তরপত্র দাখিল না করে পরীক্ষার হল ত্যাগ করা, ইনভিজিলেটর কর্তৃক চাহিবামাত্র দোষণীয় কাগজপত্র প্রদান না করে তা নাগালের বাইরে ফেলা/ ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা/গিলে ফেলা;
উত্তরপত্র বিনষ্ট করা/ছিঁড়ে ফেলা, দোষণীয় কাগজপত্র / দ্রব্যাদি, উত্তরপত্র বা প্রবেশপত্র ইত্যাদি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা বা জব্দ করার ক্ষেত্রে কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি করা; পরীক্ষা কক্ষে পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত ইনভিজিলেটর কর্তব্যরত ব্যক্তি সম্পর্কে কটূক্তি, গালাগাল, তাঁর সাথে অসদাচরণ বা তাঁকে কোনোরূপ ভীতি প্রদর্শন করা। পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গকে পরীক্ষাল হলে বা হলের বাইরে লাঞ্ছিত করা বা লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করা। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার কক্ষে কেন্দ্র চত্বর বা বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা অথবা পরীক্ষা পরিচালনার সাথে জড়িত কোনো ব্যক্তির সাথে অসদাচরণ করলে বা তাঁকে দৈহিক আক্রমণ করলে; সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠনে কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি, গোলযোগ সৃষ্টি, অন্যকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা প্রদান, অন্য পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল ত্যাগে বাধ্য না উসকানি প্রদান, পরীক্ষা কক্ষ ভাঙচুর, আসবাবপত্র ভাঙচুর করা বা আগুন দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরীক্ষাসংক্রান্ত উল্লিখিত অপরাধের জন্য পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটি নিম্নবর্ণিত শাস্তির সুপারিশ করতে পারবে—সংশ্লিষ্ট বছরের পরীক্ষা বাতিলসহ পরবর্তী ১ (এক) থেকে ৪ (চার) বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, পরীক্ষার্থীর কোনো অপরাধ উপর্যুক্ত শাস্তির আওতায় না পড়লে পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটি অপরাধের প্রকৃতি বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যেকোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবে।