পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজে একের পর এক হারের মুখ দেখছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অসহায় আত্মসমর্পণ করে সিরিজ হারের লজ্জায় ডুবেছেন লিটন দাসরা। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও একই দশা হয়েছিল টাইগার বাহিনীর। তাতে কয়েক দিনের ব্যবধানে দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ হার দেখলেন কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্তরা।
এবার সালমান আগাদের বিপক্ষে আজ রাত ৯টায় শেষ ম্যাচে হারলে ভাসতে হবে ধবলধোলাইয়ের লজ্জায়। লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা মাঠে নিজেদের প্রমাণ করতে পারছেন না কোনো বিভাগেই। ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং সবখানেই যেন আত্মবিশ্বাসহীনতা প্রকটভাবে ধরা দিচ্ছে।
দ্বিতীয় ম্যাচে বাজে হারের পর একরাশ হতাশা ফুটে উঠেছে টাইগারদের পারফরম্যান্সে। শুরুর দিকে কিছুটা প্রতিরোধের ইঙ্গিত দিলেও পুরোনো রোগ চেপে বসেছে লিটনদের শিরা-উপশিরায়। হারের পরে অধিনায়ক লিটন দাস বলেছেন, 'ক্রিকেটে মৌলিক বিষয়গুলো অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে, সেগুলো অনুসরণ না করলে এমন (হারের হতাশা) অবস্থা হবে। তবে এখনো এক ম্যাচ বাকি রয়েছে। আমাদের আর একটা সুযোগ অপেক্ষা করছে। এই মুহূর্তে আমাদের বসতে হবে, আলাপ করতে হবে এবং কীভাবে আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেই মানসিকতা তৈরি করতে হবে।'
হতাশাজনক হার নিয়ে টাইগারদের নেতা আরও বলেছেন, 'আমার মনে হয় যখন শরীফুল আহত হন, তখন সেই সময়ের গতি সম্পূর্ণরূপে বদলে গিয়েছিল। আমরা জানতাম আমাদের বোলিংয়ে অভাব ছিল, তবুও আমরা ভালোভাবে ফিরে এসেছিলাম।'
তবে এ সব অজুহাতে ভুল আড়াল করা যাচ্ছে না। চোখে পড়া ভুলে বারবার উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসা, মাঝপথে রান নেওয়ার ভুল বোঝাবুঝি, কিংবা ফিল্ডিংয়ে অনভিপ্রেত মিস-সব মিলিয়ে যেন পরিকল্পনাহীন এক দল মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে উজ্জ্বল চেহারায় সিরিজ জয়ের পরে অধিনায়ক সালমান আগা বলেছেন, 'আমি এটাই চাই, আমাদের সবসময় এমন খেলোয়াড় থাকা উচিত। যে কোনো অধিনায়কই এটা পছন্দ করবেন। হাসান নেওয়াজের ব্যাটিং প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, 'তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতিভা।'
বাংলাদেশ দলে পরিকল্পনার ঘাটতি পূরণ, কিংবা মানসিকভাবে দৃঢ়ভাবে ফিরে আসার কথাই বলছেন লিটন। কিন্তু বারবার হারের পরেও যেন কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তনের ছাপ নেই। আজকের ম্যাচে হারলে ধবলধোলাইয়ের কলঙ্ক নিয়ে দেশে ফিরতে হবে টাইগারদের। সমর্থকরা হতাশ, ক্রিকেট বোর্ড তোলপাড়, আর মাঠে হারের পর হারের মিছিল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন শুধু প্রতিশ্রুতির মুখে, বাস্তবে শুধুই ব্যর্থতার ছায়া। পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের স্মৃতি এখনো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জীবন্ত রয়েছে। কিন্তু তার পরে যেন এই দলটি নিজের ছায়াপথে ঘুরপাক খাচ্ছে। দর্শকদের মন উঠে যাচ্ছে ২২ গজের জনপ্রিয় এই খেলা থেকে। তবু সেই রাস্তা বন্ধ করার দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।