ফল হিসেবে আমলকির গুণের শেষ নেই। এ ছোট্ট ফলে শরীর, ত্বক এবং চুল ভাল রাখতে যা যা দরকার তার সবই আছে। এতে ভিটামিন সি, ই, অ্যান্টি-অ্যাক্সিড্যান্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে।
চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার বহু পুরনো। অকালপক্বতা দূর করতে, মাথার ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে, খুশকি সমস্যার সমাধানে আমলকি বিশেষ কার্যকর। আমলকিতে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। তা মাথায় রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
রাসায়নিক বর্জিত কেশচর্চায় আমলকির ব্যবহার অনন্য। এতে কমবে চুল ঝরা, ঘন হবে কেশ। অনেকে আমলকি দিয়ে চুলের মাস্কও ব্যবহার করেন। শরীর ভাল রাখতেও আমলকির শট খাওয়া যায়।
তেল
অনেকেই নারকেল তেলে আমলকি থেঁতো করে দিয়ে ফুটিয়ে, সেই তেল মাখেন। নারকেল তেল ছাড়াও পছন্দের যে কোনও তেলে আমলকির রস মিশিয়ে বা সেটি থেঁতো করে দিয়ে মাখা যায়। তেল মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়।
উপকারিতা: রুক্ষ চুলের সমস্যা থাকলে তেল মালিশ খুব কার্যকর। ডগা ফাটা কমাতে পারে। অযত্নেও অনেক সময় চুল ঝরে। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহে ৩-৪ দিন আমলকির তেল মালিশ করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে কয়েক মাসেই। তবে মাথার ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে তেল মালিশে চুল তেলচিটে হয়ে যায়।
মাস্ক
মাস্ক মাথার ত্বকের গভীরে গিয়ে চুলে পুষ্টি জোগানোর ফলে চুল নরম এবং সুন্দর হয়। চুলের পরিচর্যায় বাড়িতেই টক দই, শিকাকাই গুঁড়ো, মেথি, ভৃঙ্গরাজ- এমন নানা উপকরণ দিয়ে মাস্ক তৈরি করে নেওয়া যায়।
উপকারিতা: চুলের গোড়া মজবুত করতে, অকালপক্বতা রোধে সাহায্য করে মাস্ক। এটি চুলে আর্দ্রতা জোগায়। আমলকির সঙ্গে টক দই, ভৃঙ্গরাজ, মেথির গুণও যোগ হয় মাস্কের ব্যবহারে। মাস্ক ২০-৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
আমলকির রস
আমলকির রস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। ভিটামিন সি, ই এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শুধু চুলের যত্নই নেয় না, ত্বক এবং শরীর ভাল রাখতেও সহায়ক।
পুষ্টিবিদেরা জানান, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল, ত্বক পেতে হলে ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। ঠিক সে কারণেই আমলকির রস শুধু শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে না, এতে চুলও ভাল হয়।
উপকারিতা: চুল ঘন এবং মসৃণ হয়। এতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চুলের প্রয়োজনীয় কোলাজেন প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট।
চুল ঝরা, ডগা ফাটা, খুশকির সমস্যা থাকলে আমলকির তেল মালিশ অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। সপ্তাহে ২-৩ দিন মিনিট পাঁচ-দশেক তেল মাখলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে, রুক্ষ ভাব দূর হবে।
অন্যদিকে, মাস্ক মাসে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। এটিও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য জরুরি।
আমলকির রস সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। তবে আমলকির রস নিয়মিত খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। মাথার ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে আমলকির তেল নিয়মিত বা বেশি না মাখাই ভাল।