২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:৫৪:২৪ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে বিনিয়োগের ১৪ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামী ৪ যুবক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১১-২০২৩
রাজশাহীতে বিনিয়োগের ১৪ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামী ৪ যুবক

 রাজশাহীতে এমটিএফই অ্যাপের কর্মকর্তা দম্পত্তির মাধ্যমে ১৪ লাখ টাকা খুইয়ে দিশেহারা এক পরিবার। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী পরিবার টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে উল্টা চাঁদাবাজির মামলার আসামী হয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।


জানা গেছে, এমটিএফই রাজশাহীর সিইও রাজপাড়া থানা এলাকার রাজপাড়া মহল্লার খোকোনের ছেলে আব্দুর রহমান বিপ্লব ও তার স্ত্রী সুমির মাধ্যমে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হন এক পরিবারের চারজন। বিনিয়োগ করা ১৪ লাখ টাকা ফেরত চাইতে যাওয়ার অপরাধে উল্টা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার চার ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে।


ভুক্তভোগীরা হলেন, রাজপাড়া থানা রাজপাড়া মহল্লার মৃত শহিদুল্লাহ ছেলে ইকবাল হোসেন ফিরোজ, তার বড় বোন ফেরদৌসী, তার ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন ও ফাইম হোসেন ফাহিম।


এমটিএফই অ্যাপের রাজশাহীর সিইও রাজপাড়া থানা এলাকার রাজপাড়া মহল্লার আব্দুর রহমান বিপ্লব ও তার স্ত্রী সুমির ভাই ইমদাদুল ইসলামের ছেলে কায়সার হামিদ শাহিন গত ৫ নভেম্বর রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজপাড়া থানা আমলী আদালতে মামলাটি করেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামী করে। তাদের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ আনে মামলায়।


ইকবাল হোসেন ফিরোজ জানান তিনিসহ তার বোন ও ছোট ভাই মিলে এমটিএফই অ্যাপের সিইও আব্দুর রহমান বিপ্লব ও বিপ্লবের স্ত্রী সুমির মাধ্যমে ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়। র্দীঘদিন যাবত টাকা ফেরত দিবো দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে। সিইও বিপ্লব র্দীঘদিন যাবত পলাতক রয়েছে। তার স্ত্রী সুমি ও বিপ্লবের পিতা, মাতা রাজপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। পুলিশকে বিপ্লবের স্ত্রীকে আটকের জন্য বার বার খবর দিয়েও কোন লাভ হয়নি।


তিনি আরও জানান, গত ৩১ অক্টোবর সকালে রাজপাড়া এলাকায় শাহ আলমের ভাড়া বাড়ি থেকে এমটিএফই অ্যাপের সিইও বিপ্লবের স্ত্রী সুমি বাড়ি ছেড়ে দিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেস্টা করে। এসময় এমটিএফই অ্যাপের বিনিয়োকারিরা তার কাছে টাকা ফেরত চাইতে যায়। এসময় বিপ্লবের স্ত্রী তাদের টাকা ফেরত দেয়াতো দুরের কথা, তাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।


এসময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমটিএফই অ্যাপের সিইও সুমির ভাই কায়সার হামিদ শাহিন গত ৫ নভেম্বর রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজপাড়া থানা আমলী আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করেন।


উল্লেখ্য, রাজশাহীতে হাজারও মানুষ এমটিএফই অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে ২০২৩ সালের গত ২৩ জুলাই রাজশাহীর আইনজীবী জহুরুল ইসলাম রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার দায়ের করেন এমটিএফই অ্যাপের বিরুদ্ধে। মামলাটি তদন্ত করে অ্যাপের সাথে জড়িতোদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আদালত। মামলাটি তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই), রাজপাড়া থানা পুলিশ ও সিআইডির তিন পুলিশ অফিসারকে তদন্ত ভার দেয়া হয়।


মামলার পরে এমটিএফই অ্যাপের সিইও নওগাঁ মহাদেবপুরের রশিদের ছেলে লতিফুর বারীকে ও রাজশাহী মোহনপুর বিষহারা গ্রামের দিজেন্দ্রনাথ সাহার ছেলে দিপেন্দ্রনাথ সাহাকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে অ্যাপের বিরুদ্ধে মামলার পর থেকে রাজশাহীর মুল হোতা রাজপাড়া থানা এলাকার ডালুর ছেলে সবুজ, তার স্ত্রী এবং তার অন্যতম সহযোগী খোকোনের ছেলে সিইও আব্দুর রহমান বিপ্লব এলকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে বিপ্লব পলাতক রয়েছে। বিপ্লবের স্ত্রী সুমি অ্যাপের সিইও পদে রয়েছেন। তবে সুমি রাজপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসাতে থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ এখন পর্যন্ত।

শেয়ার করুন