২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১০:৩১:৩৫ পূর্বাহ্ন
ঈদে পশ্চিমাঞ্চলে দুটি বিশেষ ট্রেন, নেই রাজশাহীর
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৪-২০২৩
ঈদে পশ্চিমাঞ্চলে দুটি বিশেষ ট্রেন, নেই রাজশাহীর

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। একটি চলবে পঞ্চগড় থেকে জয়দেবপুর ও অপরটি চিলাহাটি-ঢাকা রুটে। তবে বিভাগীয় শহর রাজশাহী ও খুলনায় নেই কোনো বিশেষ ট্রেন।

রাজশাহী-ঢাকা রুটে চারটি ট্রেন চলাচল করে থাকে। বিশেষ ট্রেন না থাকায় ট্রেনে কোচ যুক্ত করার কথা ভাবছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে ট্রেনে কোচ যুক্ত করা হলে কতটা চাহিদা মিটবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে যাত্রীরা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করে সিল্কসিটি, বনলতা, ধুমকেতু ও পদ্মা এক্সেপ্রেস। এই চারটি ট্রেন এবার ঈদে চলাচল করবে। যাত্রীদের চাপের কথা বিবেচনা করে সাপ্তাহিক বন্ধগুলো বাতিল করা হয়েছে। ট্রেনগুলো যথারীতি ঈদের আগে ও পারে চলাচল করবে। আর সিল্কসিটি, বনলতা, ধুমকেতু ও পদ্মা এক্সেপ্রেসে কোচ যুক্ত করা হবে। তবে ট্রেনগুলোতে কয়টি করে কোচ যুক্ত করা হবে সেই বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।

এদিকে বিশেষ ট্রেন না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহীর বিশিষ্টজনেরা। তাদের মতে, রাজশাহী শিক্ষানগরী। লাখ লাখ শিক্ষার্থী  এই নগরীতে পড়াশোনার সুবাদে থাকে। এছাড়া রাজশাহী বিভাগীয় শহর হওয়ায় কর্মের সুবাদে অসংখ্য মানুষ থাকেন এখানে। তারা ঈদকে কেন্দ্র করে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও বিশেষ ট্রেন দেওয়ার দরকার ছিল।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নূর আহসান মৃদুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো রমজানেও চলছে তাই আমাদের ২০ রমজান পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে। ঈদ যত কাছে আসছে যাতায়াতের উপর বড় প্রভাব পড়ছে। আমরা বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ট্রেনে যাতায়াত করি। এতে খরচ কম হয়। কিন্তু ঈদের সময় ট্রেন কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই কোনো অতিরিক্ত ট্রেন থাকলে শুধু আমাদের নয়, সবার জন্য ভালো হতো।

মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহক, সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা না করা দুঃখজনক। এই ধরনের সিদ্ধান্ত রাজশাহীর প্রতি বিমাতা সুলভ আচরণ। এখনও সময় আছে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায়। তা নাহলে এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রেলওয়ে নিয়ে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে। কারণ রেলওয়ে জনগণের সাশ্রয় ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের একটি মাধ্যম। যেহেতু রেলওয়ে সেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান, তাই এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা উচিত।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ট্রেন ও বাসে যাতায়াত করেন না। তারা বিমানে যাতায়াত করেন। মূলত রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া ট্রেন যাতায়াত সহজ করা সম্ভব না।

রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার আবদুল করিম বলেন, এবার ঈদে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে দুটি বিশেষ ট্রেন চলচল করবে। একটি পঞ্চগড় ও অন্যটি চিলাহাটি-ঢাকা রুটে। তবে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে কোনো বিশেষ ট্রেন থাকছে না।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্যাসেঞ্জারের কার্যালয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল আওয়াল বলেন, রাজশাহী থেকে কোনো স্পেশাল ট্রেন থাকছে না। এছাড়া ঈদের পরের দিন পদ্মা এক্সপ্রেস, ধুমকেতু, মধুমতি, টঙ্গিপাড়া, বাংলাবান্ধা, তিতুমীর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে চলাচল করবে। ঈদের আগে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে নতুন ৪৫টি কোচ যুক্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, স্পেশাল ট্রেন চলবে দুটি। একটি পঞ্চগড় থেকে জয়দেবপুর, অপরটি চিলাহাটি থেকে ঢাকা। এছাড়া রূপসা, সিমান্ত, দোলনচাঁপা ও করতোয়া ট্রেনে একটি করে কোচ যুক্ত হবে। কপোতাক্ষ-রাজশাহী খুলনা ও খুলনা-ঢাকা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে। পঞ্চগড় থেকে চলবে একতা। চিলাহাটি থেকে চলবে নীলসাগর। রংপুর থেকে চলবে রংপুর এক্সেপ্রেস। তবে ঈদের পরের ছুটিগুলো বহল থাকবে।

রাজশাহীর নারী এমপি আদিবা আনজুম মিতা বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগীয় শহর হিসেবে স্পেশাল ট্রেন প্রয়োজন ছিল। স্পেশাল ট্রেন থাকলে ভালো হতো। বিষয়টি নিয়ে আমি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলব।

শেয়ার করুন