১৭ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ০১:০০:২১ অপরাহ্ন
ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-১১-২০২৫
ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হবে।


সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রায় দেবেন। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

 

এর আগে সকাল ৯টা ১০ মিনিটের পর কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আজই তাকে শেষবারের মতো হাজির করা হলো। বছরখানেক ধরে কারাগারে থাকা সাবেক এই আইজিপি রাজসাক্ষী হিসেবে ইতোমধ্যে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার শাস্তি হবে কি না- সে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ দণ্ড দাবি করা হয়েছে।


রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট ও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় বহুস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর। নিরাপত্তার কারণে রোববার সন্ধ্যা থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ এবং জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।


গত ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। শুনানি শেষে মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন হয়। প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্সের যুক্তি-খণ্ডন চলে আরও ৯ কার্যদিবস। রাষ্ট্রের প্রধান আইনকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্যসহ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়।


মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, অভিযোগগুলো হলো- উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার; যেখানে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, জব্দতালিকা-দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।


প্রসিকিউশন যেখানে হাসিনা-কামালের সর্বোচ্চ দণ্ড দাবি করেছে, সেখানে রাজসাক্ষী হওয়ায় মামুনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মামুনের খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের বিশ্বাস, শেখ হাসিনা ও কামাল খালাস পাবেন।


শেয়ার করুন