১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০:৩০:০৪ অপরাহ্ন
রাজশাহীর খাদ্যগুদামে চাল নিয়ে ‘চালবাজি’, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১০-২০২৫
রাজশাহীর খাদ্যগুদামে চাল নিয়ে ‘চালবাজি’, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

রাজশাহীতে চাল নিয়ে কারসাজির অভিযোগে বাগমারা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (উপখাদ্য নিয়ন্ত্রক) চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (সরকারি খাদ্য নিয়ন্ত্রক) সাতক্ষীরায় বদলি করা হয়েছে। আর রাজশাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক)।


বুধবার (৮ অক্টোবর) বাগমারার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার আদেশে সই করেন উপসচিব জয়নাল মোল্লা।


আদেশে বলা হয়েছে, ‘তার চাকরিকাল বয়স ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু সরকার জনস্বার্থে তাকে সরকারি চাকরি হতে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে; সেহেতু সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ৪৫ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে সরকারি চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো।’


এদিকে এ ঘটনায় রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা (সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক) ওমর ফারুককে সাতক্ষীরা জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। রাজশাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক) মোহন আহমেদকে। তার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। নীতিমালা অনুযায়ী নিজ জেলা কোনো কর্মকর্তা এই দায়িত্ব পেতে পারেন না। তিনি একই সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক।


বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এই আদেশে স্বাক্ষর করেন উপসচিব জয়নাল মোল্লা।


এ ব্যাপারে রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উদ্দিন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাজশাহী শহর থেকে সবচেয়ে নিকটে। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ একটি ছোট জেলা। এই দুটি জেলার দায়িত্ব পালন করা দূরের কারো চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কর্মকর্তার সহজ হবে। আর তাকে সাময়িক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বদলি হয়ে আসার আগপর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। এটা তার সাময়িক দায়িত্ব। কিন্তু এটা ঠিক পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব নিয়ে যিনি আসবেন তিনি নিজ জেলায় দায়িত্ব পাবেন না।


নিয়ম অনুযায়ী কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে তা চুক্তিবদ্ধ মিলারদের মাধ্যমে চাল বানিয়ে সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু রাজশাহীর খাদ্যগুদামে নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল ঢুকিয়ে পরে কর্মকর্তারা নিজেরাই পাল্টে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ধান ছাঁটাই, পরিবহন ব্যয়সহ ভালো চালের খরচ দেখিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।


গত ৪ সেপ্টেম্বর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম খাদ্যগুদামে অভিযান চালান। তিনি সেখানে বিপুল পরিমাণ খাওয়ার অনুপযোগী চাল পান এবং তিনটি গুদাম সিলগালা করে দেন। পরে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ২৬ আগস্ট জেলার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিনও স্থানীয় খাদ্যগুদামে অভিযান চালিয়ে অনুপযোগী চাল উদ্ধার করেছিলেন। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই গুদাম থেকে ৮০ মেট্রিক টন চাল সরানো হয়।


শেয়ার করুন