দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের আত্মসমালোচনার ইতিহাস নতুন কিছু নয়। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট হারের পরই ক্যাপ্টেনের পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন নাসের হুসেইন, মাইকেল ভন ও অ্যান্ড্রু স্ট্রস।
দুই বছর আগে মুম্বাইয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের কাছে বড় হারের পর থেকেই ইংল্যান্ডের ৫০ ওভারের ক্রিকেটে পতনের শুরু। এ বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আরেকটি পরাজয় জস বাটলারের অধিনায়কত্বের সমাপ্তি টেনে দেয়।
হেডিংলিতে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইংল্যান্ডের ভরাডুবি—এ নিয়ে তিন ম্যাচে টানা হারের পরও হয়তো নেতৃত্বে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে এটি হ্যারি ব্রুকের নতুন অধ্যায়ে এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
মাত্র ১৩১ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। অধিনায়ক ব্রুকের রানআউটের পর এক ঝটকায় ২৯ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট হারায় দল।
উইল জ্যাকস, জ্যাকব বেথেল কিংবা বাটলার—কেউই দাঁড়াতে পারেননি। দর্শকরা হতাশ হয়ে আগেভাগেই মাঠ ছাড়েন।
ব্রুক অবশ্য হারের পরও দৃঢ় থাকার চেষ্টা করেছেন। ২৬ বছর বয়সী এই অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমরা কোনো অজুহাত দিচ্ছি না।
খারাপ দিন ছিল, ভুলে গিয়ে সামনে এগোতে হবে।’
তবে ক্লান্তি স্পষ্ট ব্রুকের শরীরী ভাষায়। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে তিনি জীবনের সবচেয়ে ক্লান্তিকর বলে বর্ণনা করেছিলেন। এরপর মাত্র তিন দিনের বিরতি পেয়ে তিনি নর্দার্ন সুপারচার্জার্সের হয়ে ‘দ্য হান্ড্রেড’ টুর্নামেন্টে পুরো এক মাস কাটিয়েছেন। সেই চাপ হয়তো রানআউটের মুহূর্তেও প্রভাব ফেলেছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সদ্য অস্ট্রেলিয়া সফর শেষ করে এসেও মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। টেম্বা বাভুমার দল মাঠে প্রমাণ করেছে প্রস্তুতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
দিনের সবচেয়ে হতাশার গল্প লিখেছেন তরুণ পেসার সনি বেকার। ওয়ানডে অভিষেকে ৭ ওভারে ৭৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি, সঙ্গে প্রথম বলেই ব্যাট হাতে আউট। অথচ ম্যাচের আগে পরিবারের সঙ্গে ইংল্যান্ডের সারিতে দাঁড়িয়ে স্বপ্নের সূচনা করেছিলেন তিনি।
এখন ব্রুকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বেকারকে মানসিকভাবে সামলে রাখা।
আগামী ম্যাচগুলোতে ইংল্যান্ডের জন্য সময় খুবই সীমিত। বৃহস্পতিবার লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ, রবিবার সাউদাম্পটনে তৃতীয়। এরপর পাঁচ দিনের ব্যবধানে তিনটি টি-টোয়েন্টি আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তারপর আয়ারল্যান্ড সফর।
অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স যেখানে ফিটনেস ফিরে পেতে দুই মাস বিশ্রাম নিচ্ছেন, সেখানে ইংল্যান্ডের মূল তারকারা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত ব্যস্ত সূচিতে তারা কখনো অপ্রস্তুত, কখনো ক্লান্ত।
হেডিংরিতে ভরাডুবির পর তাই প্রশ্ন উঠছে—ইংল্যান্ড কি আসলেই সঠিক পথে আছে, নাকি আরো বড় ধাক্কার অপেক্ষায়?