২৯ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৮:৩৮:৫৯ অপরাহ্ন
ব্যবসা-বাণিজ্যে মহাসংকট দেশি-বিদেশি শুল্কে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৭-২০২৫
ব্যবসা-বাণিজ্যে মহাসংকট দেশি-বিদেশি শুল্কে

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সংকটময় অবস্থা পার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে দেনদরবার চলছে। আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক না কমলে ১ লা আগস্ট থেকে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অরোপ করা হবে। এর ফলে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক অরোপ হবে।


ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো কঠিন হবে।

এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবা খাতের মাশুল বা ট্যারিফ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আবার বেসরকারি ডিপোতে কনটেইনার ব্যবস্থাপনার মাশুলের হার বাড়ানো হচ্ছে। এর পুরোটাই বহন করতে হবে আমদানি-রপ্তানিকারকদের।


এতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য মহাসংকটে পড়বে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবার মাশুল বাড়ানো হয়েছে। এরপর আর বাড়েনি। এবার সব মিলিয়ে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মতো বাড়ছে।


এর মধ্যে কোনোটির কমছে বা কোনোটির বাড়ছে। গেজেট প্রকাশের পর বন্দরের নতুন মাশুল কার্যকর হবে। নতুন করে বর্ধিত হারে মাশুল কার্যকর হলে এ ক্ষেত্রে আয় বা আদায় কমবেশি ৪০ শতাংশ বাড়বে। এ হিসেবে মাশুল হিসাবে বন্দরের দেড় হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয় হতে পারে।

বেসরকারি কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন সার্কুলারে কনটেইনার ব্যবস্থাপনার মাশুলের হার বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।


সার্কুলারে সেবাভেদে ৩০ থেকে ১০০ শতাংশ মাশুল বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সংগঠনটি, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মুখে রয়েছে। রপ্তানির ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে এখনো সরে আসেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সরকার কিছু করতে না পারলে ১ আগস্ট থেকে নতুন এ শুল্ক কার্যকর হবে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরে সেবার বিপরীতে নতুন করে ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হবে।


বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘ঝড়ের মধ্যে লঞ্চ ছাড়তে হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্যে এখন ঝড় চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক এখনো ফাইনাল হয়নি। এখন বন্দরের শুল্ক না বাড়িয়ে ছয় মাস পরে বাড়ানো যেত। ৩৯ বছর বাড়ানো হয়নি। ছয় মাস অপেক্ষা করলে কী হয়! এত সমস্যার মধ্যে এখনই কেন বাড়াতে হবে? এর মাধ্যমে ভুল বার্তা যাবে বিনিয়োগকারীদের কাছে। অনেকে হয়তো বলতে পারেন ৮০ ডলার ১০০ ডলারে কী আসে যায়! কিন্তু এ সময়ে এটা উপযুক্ত নয়। ঝড়ে ডুবে যাওয়ার সময় একটা কলা গাছও গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘সরকার এ মুহূর্তে আবার শ্রম আইন সংশোধন করার জন্য উঠেপড়ে লাগছে। এটাও সঠিক সময় নয়। যেটা চার বছরে হয়নি, সেটা ছয় মাস পরে হলে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। আইএলও আমাদের মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। আমাদের এত আগে আগস্টে শেষ করার দরকার কী! এর সঙ্গে ট্যারিফ বাড়ানোর ফলে আমরা বিনিয়োগকারীদের ভুল বার্তা দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষতি কতটুকু হবে জানি না, তবে বিনিয়োগকারীরা এতে মানসিক চাপে পড়বেন। ফলে এসব উদ্যোগ আপাতত স্থগিত রাখা উচিত। আমরা আশা করছি, ছয় মাসে আমাদের ব্যবসা বাড়বে। যখন পরিস্থিতি ভালো হবে তখন এসব করা যেতে পারে।’ 


শেয়ার করুন