০৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৮:৫৭:৩২ অপরাহ্ন
এবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিল্পকলার চারুকলা পরিচালক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৭-২০২৫
এবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিল্পকলার চারুকলা পরিচালক

সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগের চার মাসের মাথায় এবার শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালকের পদ ছাড়লেন মোস্তফা জামান। বুধবার (০২ জুলাই) তার পদত্যাগপত্র হাতে পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন।


তিনি বলেন, আমি গতকাল উনার পদত্যাগপত্র হাতে পেয়েছি। এখনো এটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাইনি। কাল হয়তো পাঠাব। পদত্যাগের কারণ হিসেবে মোস্তফা জামান কী লিখেছেন জানতে চাইলে ওয়ারেছ হোসেন বলেন, উনি ব্যক্তিগত কারণ লিখেছেন।


এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বুধবার কয়েক দফা মোস্তফা জামানকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে পদত্যাগ নিয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


শিল্পকলা একাডেমির কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, মহাপরিচালক পদ শূন্য থাকায় এখন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেই সরাসরি শিল্পকলার কাজ নির্ধারিত হচ্ছে। ফলে শিল্পকলার যে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চরিত্রে থাকার কথা, তা এখন আর নেই।


এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হঠাৎ মহাপরিচালক পদ থেকে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। পরে তিনি সংস্কৃতি উপদেষ্টার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগসহ শিল্পকলার কাজে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা সামনে এনেছিলেন।


জামিল আহমেদের পদত্যাগের পর থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।


গত বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে মহাপরিচালকের পদ ছাড়েন লিয়াকত আলী লাকী। পরে ৯ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালক পদে নাট্যনির্দেশক ও গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদকে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। পুনর্গঠন করা হয় শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ।


৩০ সেপ্টেম্বর একাডেমির বিভিন্ন বিভাগে ছয়জন নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য এই নিয়োগ পান।


এর মধ্যে চারুকলা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয় মোস্তফা জামানকে। এছাড়া নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগে ফয়েজ জহির, সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগে মেহজাবীন রহমান, গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগে তানজিম ওয়াহাব, প্রযোজনা বিভাগে আব্দুল হালিম চঞ্চল এবং প্রশিক্ষণ বিভাগের দায়িত্ব এফ এম নুরুর রহমানকে দেওয়া হয়।


মহাপরিচালক ছাড়া শিল্পকলাকে ‘চালকহীন গাড়ি’র সঙ্গে তুলনা করে শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনা পরিষদের সদস্য লেখক আলতাফ পারভেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক তো হলেন মূলত ওই প্রতিষ্ঠানের চালক। তিনিই যদি না থাকেন, তবে সেই প্রতিষ্ঠান চলবে কীভাবে?”


মহাপরিচালকহীন শিল্পকলার কর্মকাণ্ড হয়ত বন্ধ হয়ে যায়নি, তবে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন আলতাফ পারভেজ।


তিনি বলেন, আমাকে যখন পরিষদের সদস্য করা হয়, আমি আসলে জামিল আহমেদ আছেন বলেই রাজি হয়েছিলাম। বর্তমান পরিষদ গঠিত হওয়ার পর একটি সভা হয়েছে, সেই সভাতে আমি ব্যক্তিগত কারণে উপস্থিত থাকতে পারিনি। এরপর তো আর সভা হয়নি। আলতাফ পারভেজও পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।


তিনি বলেন, আমি পদত্যাগের চিঠি ড্রাফট করে রেখেছি। সেটি এখনো পাঠানো হয়নি। শিল্পকলার দিকে যাওয়ার সময় করে উঠতে পারছি না, এজন্য পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়নি। শীঘ্রই গিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়ে আসব।


শেয়ার করুন