রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান আবাসিক হলে শার্ট-ক্যাপ পরিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে হলে রাত্রিযাপন করেছেন এক ছাত্র। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর হলের আসন বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। গত ৪ জুন হলের ১৫৩ নাম্বার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার (২১ জুন) দুপুরের দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা শুরু হয়।
ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রীও একই বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মোতাহার হোসেন বলেন, হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছিল। ঘটনাটি সত্য। তবে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে অবস্থান করায় জবাবদিহি করা যায়নি। পরে ক্যাম্পাসে আসলে তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়। ঘটনাটি স্বীকার করায় ওই শিক্ষার্থীর হলের আসন বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, সেখানে তার বিরুদ্ধে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
হলের প্রত্যক্ষদর্শী দুই শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ৪ জুন ভোরে একটি ছাত্র সাইকেল চালিয়ে হল থেকে তাদের সামনে দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। তার সাইকেলের পেছনে একটি মেয়ে বসা ছিল, তার গায়ে শার্ট আর মাথায় ক্যাপ পড়া ছিল। বিষয়টি তাদের চোখে অস্বাভাবিক লাগায় তাকে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এ ব্যাপারে জানতে নাজমুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, গত ৩ জুন তার জন্মদিন ছিল। জন্মদিন পালন করতে গিয়ে রাত হয়ে যায়। এদিকে ওই নারী শিক্ষার্থীকে ঈদের ছুটির জন্য মেস থেকে তিন তারিখের মধ্যে চলে যেতে বলা হয়। ওই নারী শিক্ষার্থী মেসে যেতে পারবে না বলে তাকে রাখার জন্য অনুরোধ করেন। পরে তাকে রাতে হলে নিয়ে আসেন। মূলত ওই নারীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তিনি হলে নিয়ে এসেছিলেন।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। নেটিজেনরা তাদের দুজনের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
‘আরইউ ইনসাইডার’ নামে একটি ফেসবুক পেইজে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লেখা হয়, এ ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটানোর মতো যেন সাহস কেউ করতে না পারে, এজন্য বড় ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি মেয়েটিও একই অপরাধে দোষী। তাকেও যেন শাস্তির আওতায় আনা হয়। এ ধরনের ঘটনা যেমন একটা মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত স্থর তেমনি তা বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জারও বটে।
রহিমা বেগম নামে একজন লিখেছেন, ছাত্রত্ব বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সভাপতি ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, হল প্রশাসন মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন। তারা ইতোমধ্যে ঘটনাটি তদন্ত করেছে। প্রতিবেদন শিগগির জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। ঘটনা সত্যি হলে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।