আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাস। কভিড শনাক্তে পুনরায় আরটি পিসিআর ল্যাব সচল করছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাজশাহী বিভাগে করোনা পরীক্ষার জন্য তৎকালীন ৬টি সরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। কিন্তু করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় বেশির ভাগ ল্যাবই বন্ধ হয়ে যায়।
নতুন করো করোনা শনাক্ত বেড়ে যাওয়ার এসব ল্যাব চালু করতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ৬টি ল্যাবের মধ্যে দুটির মেশিন নষ্ট। এ ছাড়া কিট সংকটের কারণে শুধুমাত্র রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ভাইরালজি বিভাগের আরটি পিসিআর ল্যাবটিই শুধুমাত্র এখন সচল রয়েছে। ফলে রাজশাহী বিভাগরে করোনা শনাক্তে রামেকের ল্যাবই একমাত্র ভরসা।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে বিভাগে করোনা শনাক্তের জন্য সরকারিভাবে ৬টি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। এসব ল্যাব রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পাবানা হাসপাতাল, শহীদ মুনসুর আলী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ, শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতাল বগুড়া, নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বসানো হয়। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও নওগাঁ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বাকিগুলো কিট সংকটে সচল করা যাচ্ছে না।
এদিকে বেসরকারিভাবে টিএমএসএস হাসপাতাল বগুড়া ও খাজা ইউনুস আলী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ ল্যাব চালু করলেও এখনো সেগুলো বন্ধ রয়েছে।
এদিকে কভিডকালে চরম সংকট দেখা দেওয়ায় বিশ্বব্যাংকের দেওয়া ঋণে ‘কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’র (ইআরপিপি) আওতায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ৯৪টি শয্যার বরাদ্দ পায় রাজশাহী বিভাগ। তবে আইসিইউ চালাতে লোকবল সংকটে রাজশাহী ও বগুড়া ছাড়া বাকি জেলাগুলোর হাসপাতালগুলোতে ৪৪টি শয্যা অলস পড়ে আছে। এতে রোগীদের অতিরিক্ত চাপে সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে এই দুই জেলার হাসপাতাল দুটি।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইআরপিপি প্রজেক্টের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৯৪টি আইসিইউ-এর মধ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৪০টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ১০টি, সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ১০টি, জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ১০টি, বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৮টি ও সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৬টি দেওয়া হয়।
তবে রামেক ও শজিমেক হাসপাতাল ছাড়া বাকিগুলোতে ফেলে রাখা হয়েছে আইসিইউ শয্যা। ফলে উত্তরাঞ্চলের এই জেলাগুলোর গুরুতর রোগীদের চাপ পড়ছে এই দুই হাসপাতালে। ফলে সংকটাপন্ন রোগীরা সিরিয়াল না পেয়ে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন।
রাজশাহী বিভাগ স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, করোনা কমে যাওয়ার কারণে অনেক দিন ল্যাব বন্ধ ছিল। করোনা আবারো বেড়ে যাওয়ার কারণে ল্যাবগুলো সচল করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুই একটি ল্যাব বন্ধ পড়ে থাকার কারণে অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো সচলের জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যপ্ত পরিমানের কিটের চাহিদা আমরা দিয়েছি। সেগুলো আসলে আমরা ল্যাবগুলো আবারো চলু করবো।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী বিভাগরে ৪৪টি আইসিইউ বেড পড়ে আছে।