০৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ০৪:২৭:০৫ পূর্বাহ্ন
বাজেটে দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৬-২০২৫
বাজেটে দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব আজ রোববার (২ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। বিকেল ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এই বাজেট ঘোষণা করবেন, যা সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন।


প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক ও মূসক (ভ্যাট) বাড়ানো বা কমানোর প্রস্তাব আসতে পারে, যার ফলে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। আবার কিছু পণ্যের দাম কমে আসতে পারে।


এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার


প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়। বিক্রির সময়ও রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ উৎসে কর। এছাড়া মার্জিন বিল পরিশোধে গ্যাস বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৫ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়।


জ্বালানি তেলেও শুল্ক কমছে


বাজেটে ক্রুড ফুয়েল অয়েলের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে শতাংশ এবং অন্যান্য জ্বালানি আমদানিতে ১০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমানো হতে পারে। এতে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। পাশাপাশি টায়ার, টিউব, ব্রেক প্যাড, মার্বেল-গ্রানাইটসহ স্থানীয় শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাবও থাকতে পারে।


চামড়া শিল্পে শুল্ক ছাড়


ঈদুল আজহা ও চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা বিবেচনায় কিছু রাসায়নিক উপাদানে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকতে পারে। এতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে খরচ কমবে।


নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঋণপত্রে কমছে উৎসে কর


নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব আসছে বাজেটে। বর্তমানে এসব পণ্যে ১ শতাংশ উৎসে কর থাকলেও তা অর্ধেকে নামানো হতে পারে। এতে ধান, গম, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণসহ নানা ভোগ্যপণ্যের দাম কমতে পারে। সরকার মনে করছে, উৎসে কর রাজস্বে তেমন প্রভাব না ফেললেও ব্যবসায়ীরা তা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেন। তাই কর কমিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।


ভূমি নিবন্ধনে কর কমছে


ভূমি নিবন্ধনে কাঠার পরিবর্তে শতাংশের ভিত্তিতে ফি ও কর নির্ধারণের প্রস্তাব আসছে বাজেটে। অগ্রিম কর কিছুটা কমানো হলেও মোট করের পরিমাণ তেমন কমবে না বলে মনে করছে এনবিআর। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা।


শুল্ক কমছে চিনি আমদানিতে


চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে প্রস্তাবিত বাজেটে পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক প্রতি টন ৪,৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪,০০০ টাকা করার প্রস্তাব থাকতে পারে। আগে থেকেই এ খাতে শুল্ক-কর হ্রাসে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।


সয়াবিন ও কাগজ শিল্পের কাঁচামালে শুল্ক হ্রাস


দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন খাতে সহায়তায় প্রস্তাবিত বাজেটে সয়াবিন মিল, কাগজশিল্প এবং নিউট্রালাইজড সয়াবিন তেলের ওপর শুল্ক রেয়াতের প্রস্তাব রয়েছে। নির্মাণ ও শিরিষ কাগজ শিল্পে ব্যবহৃত ফেনোলিক রেজিন ও স্যান্ডপেপারের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমানো হতে পারে। এতে উৎপাদন খরচ কমে শিল্প খাত কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে।


কম দামে মিলবে সংবাদপত্রের নিউজপ্রিন্ট


সংবাদপত্রের শিল্পে ব্যবহৃত নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক কমানোর প্রস্তাব ছিল নোয়াবসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের। সেই প্রস্তাবে সারা দিতে ও দেশীয় গণমাধ্যমকে আরও সহায়তা দিতে নিউজপ্রিন্ট আমদানির কাস্টমস শুল্ক ৫ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব বিবেচনা থাকছে প্রস্তাবিত বাজেটে।


সাশ্রয়ে মূল্যে মিলবে ক্রিকেট ব্যাট


দেশে ব্যাট উৎপাদন ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে ব্যাট তৈরির কাঠ আমদানিতে শুল্ক ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৬ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এতে ব্যাটের দাম কমে প্রান্তিক পর্যায়েও সহজলভ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


দেশি সফটওয়্যার উন্নয়নে বাড়তি সুবিধা


তথ্যপ্রযুক্তি খাত ও সফটওয়্যার রপ্তানি উৎসাহিত করতে বিদেশি অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস ও সিকিউরিটি সফটওয়্যারে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এতে ফ্রিল্যান্সার ও দেশীয় আইটি প্রতিষ্ঠানের খরচ কমবে।


মাটি ও পাতার তৈরি পণ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার


মাটির ও পাতার তৈরি তৈজসপত্রের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব আসছে। বর্তমানে এসব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। যা বাজেটে প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।


বিদেশি জুস


নন-অ্যালকোহলিক জুস আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাবও থাকতে পারে প্রস্তাবিত বাজেটে। ফলে বিদেশি জুস মিলতে পারে তুলনামূলক কম দামে।


পিভিসি পাইপ ও কপার ওয়্যার


অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত পিভিসি পাইপের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং কপার ওয়্যারের উপকরণে ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এছাড়া পরিবহণের টায়ার, টিউব, ব্রেক সু-প্যাড, মার্বেল ও গ্রানাইটের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিতেও শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব রয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম কিছুটা কমতে পারে।


শেয়ার করুন