পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই নতুন নকশার টাকা বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম ধাপে নতুন নকশার ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট ছাড়ার চূড়ান্ত হয়েছে। এসব নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির পরিবর্তে স্থান পাবে দেশের অর্থনীতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রতীক। সব নোটে থাকছে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত গভর্নর ড. আহসান মনসুরের সই।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও টাঁকশালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ টাকার নোটের ছাপা প্রায় সম্পন্ন। আগামী সপ্তাহে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করবে টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ। পরের সপ্তাহে ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝিয়ে দেবে টাঁকশাল। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে এই টাকা কবে বাজারে ছাড়বে। প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস ও অন্যান্য শাখা এবং পরে ব্যাংকগুলোকে এই টাকা দেওয়া হবে। ঈদের ছুটি শুরুর আগে সীমিতসংখ্যক নোট ছাড়া হতে পারে। কারণ, নতুন টাকার যে চাহিদা, তার তুলনায় ছাপা হচ্ছে কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানান, নতুন নোটে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এসব নোটে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকছে না। এর মাধ্যমে অর্থনীতির পাশাপাশি দেশের পরিচয় ও গৌরবকে তুলে ধরা হয়েছে।
জানা গেছে, নোটগুলো বাজারে ছাড়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রদর্শন করা হবে।
ইতোমধ্যে গণমাধ্যম নতুন ডিজাইনের কয়েকটি নোটের ছবি সংগ্রহ করেছে, যেখানে সুন্দরবন, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতীক দেখা গেছে। এসব নোটে দেশের পরিচিতি ও গৌরবময় ইতিহাসের ছাপ সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
নতুন নোটের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
১০০ টাকার নোট: এক পাশে রয়েছে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জলছবি। অপর পাশে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য, বাঘ ও হরিণের চিত্র।
২০০ টাকার নোট: (পরবর্তী ধাপে আসবে) এতে ফুটে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি।
৫০০ টাকার নোট: (পরবর্তী ধাপে আসবে) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের চিত্র স্থান পেয়েছে।
১০০০ টাকার নোট: (পরবর্তী ধাপে আসবে) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি সংযোজিত হয়েছে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, নতুন নোট শুধু বিনিময় মাধ্যম নয়, বরং দেশের পরিচয় বহনকারী সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দলিলও বটে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ের পর ধাপে ধাপে অন্যান্য মূল্যমানের নোটও বাজারে ছাড়া হবে।
নতুন নোট ছাপার কাজ ইতোমধ্যে পুরোদমে চলছে। ঈদের আগে সীমিত পরিসরে বাজারজাত করার মাধ্যমে এর প্রচলন শুরু হবে।