০৭ মে ২০২৫, বুধবার, ০১:০০:৪২ পূর্বাহ্ন
দল গঠনে মুখোশ উন্মোচন করেছেন জিমি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৫-২০২৫
দল গঠনে মুখোশ উন্মোচন করেছেন জিমি

দেশের হকিকে লজ্জায় ফেললো কারা। ৪৩ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম এশিয়া কাপ হকির চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারলো না বাংলাদেশ। টনক নড়েছে জাতীয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে পরশু। হকিতে কারা জড়িত, তাদেরকে তলব করেছে এনএসসির তদন্ত কমিটি। কাঠগড়ায় হকি ফেডারেশন। গতকাল তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান। 


একই সঙ্গে জাতীয় দলের কোচ মামুন উর রশিদ, জাতীয় হকি দলের সাবেক তারকা আরিফুল হক প্রিন্স এবং যাকে বাদ দিয়ে জাতীয় দল গঠন করা হয়েছিল, রাসেল মাহমুদ জিমিকেও তদন্ত কমিটির প্রধানের রুমে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। একে একে সবাই কথা বলে এসেছেন। সবাই চলে যাওয়ার পর হুমায়ুন কবিরের চোখে-মুখে হতাশা। কথা বলে মনে হলো খেলাধুলার মানুষদের সম্পর্কে খুব একটা জানা নেই। হকির কথা শুনে হতাশই হয়েছেন বলে মনে হলো। কথা বলার সিরিয়ালে ছিলেন কোচ মামুন উর রশিদ। হয়তো কল্পনাও করেননি এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন। ব্যর্থতার যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন, তা শুনে মন্তব্য করতে রাজি হননি তদন্ত প্রধান। প্রথম দিনই কাজটা অনেক দূর এগিয়ে ফেলেছেন মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। তার পরও আরও কিছু লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 


 


তদন্ত কমিটির রুম থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রাসেল মাহমুদ জিমি জানিয়েছেন, তিনি হকির আরও কোচ রয়েছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। জিমি বলেন, ফেডারেশন যেখানে বলছে, তারা ইয়াং প্লেয়ার নিচ্ছে অথচ অনুর্ধ্ব-২১ হকি দলটা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে, সেই দলের অনেক খেলোয়াড়কে বাদ দিয়েছে। এদেরকে দলে নিয়ে তৈরি করা যেত। অনূর্ধ্ব-২১ দলের অধিনায়ক সামিনকে বাদ দিয়েছে। শিমুলকে বাদ দিয়েছে। নয়ন, হাসান, সৈকতকে বাদ দিয়েছে।' 


তিনি বলেন, 'আমাকে বয়সের কারণে বাদ দিয়েছে। আমি কষ্ট পেয়েছি। খেলা ছেড়ে দেব বলে আমি চাইবো না হকি ধ্বংস হয়ে যাক। বয়সের কারণে কাউকে বাদ দেওয়া হয়, সেটা আপনিও (মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির) দেখেননি, আমিও দেখিনি। ফিটনেস দিয়ে খেলতে হয়। আপনি চাইলেও ফিটনেস না থাকলে খেলতে পারবেন না। আমি লম্বা সময় খেলেছি।' পৃথিবীর কোথায় কোথায় বেশি বয়সের খেলোয়াড়রা ফিটনেস দিয়ে খেলছেন, সেসব নাম উল্লেখ করে তথ্য তুলে ধরেছেন জিমি। তার চোখে মনে হয়েছে দল গঠন নিয়ে নানা অনিয়ম ছিল। সেসব তুলে ধরেছেন।


 


জিমি বলেন, 'মোহামেডানের খেলোয়াড়দেরকে ধরে ধরে বাদ দিয়েছে। দুই জন, দুই জন করে বাদ দেওয়া হলো। যোগ্যতা থাকলে কেন বাদ দেবেন আপনি। জিমি হকি ফেডারেশনে সঠিক নেতৃত্ব দাবি করে বলেছেন, 'আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, 'আপনারা সর্বোচ্চ জায়গায় আছেন, হকিটা যেন ভালোভাবে চলে, এই পথটা তৈরি করে দেন।' 


দল গঠন নিয়ে মুখোশ উন্মোচন করেছেন জিমি। তদন্ত কমিটিকে জিমি বলেছেন, 'দল গঠনের ক্ষেত্রে দলীয়করণ হয়েছে। কে কোন ক্লাবে খেলে, কে কার আন্ডারে (কোচ) খেলে, সেটা বিবেচনা করা হয়েছে।' ৫৭ জন খেলোয়াড়কে ট্রায়ালে ডাকা হয়েছিল। সেখানে জিমিকে রাখা হয়নি। জিমি বলেন, 'আমাকে ট্রায়াল দিতেও দেওয়া হয়নি।' 


আরিফুল হক প্রিন্স কী বলেছেন তদন্ত কমিটির কাছে, সেই প্রশ্নে বলেন, '৪৩ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের হকির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে এই কমিটি।' মামুন উর রশিদকে কীভাবে কোচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, পুরস্কার খিসা মিমোকে কীভাবে অধিনায়ক করা হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে তুলে ধরেন প্রিন্স। সার্চ কমিটির পক্ষে যারা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তারাই পুরস্কার পেয়েছেন বলে তদন্ত কমিটির কাছে প্রিন্সের দাবি। তিনি ছবিসহ দেখিয়েছেন তদন্ত প্রধানের কাছে।' প্রিন্স বলেন, 'ফেডারেশনে যারা রয়েছেন-সাংগঠনিক দক্ষতা নেই, ক্লাব নেই, টাকা আনতে পারে না। ৩০ বছরে আমি যাকে হকিতে দেখিনি, তার হাতে দায়িত্ব। ড্রাইভার যদি ভালো না হয় গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়বেই।'


শেয়ার করুন