২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০৭:০১:৫২ অপরাহ্ন
নানা আয়োজন রাজশাহীতে মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব পালিত
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০১-২০২৪
নানা আয়োজন রাজশাহীতে মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব পালিত

রাজশাহীতে নানা আয়োজনে নবাই বটতলা মিশনে মহা তীর্থ উৎসবের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি স্বরূপ ৯ দিন ব্যাপী নভেনা ও খ্রীষ্টযাগ করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাজার হাজার ভক্তবিশ্বাসীগণ দলে দলে তীর্থ স্থানে আসতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় খ্রীষ্টভক্তদের নিয়ে শোভাযাত্রা ও আরাধনা করা হয়। পরে সকাল ১০টায় পর্বীয় খ্রীষ্টযাগ শুরু হয়। পবিত্র খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন কার্ডিনাল বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও ও বিশপ জের্ভাস রোজারিও।


কার্ডিনাল অর্চ বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও তাঁর উপদেশ সহভাগিতায় বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এই নবাইবটতলার ভক্তবিশ্বাসীগণ রক্ষা পেয়েছিলেন। সেইথেকে নবাই বটতলার খ্রীষ্টধর্মের প্রতেক্যের জন্য এই সময়টি আশির্বাদের মূল কারণ। কারন তারা বিশ^াস করেন মা মারিয়া তাদের সব সময় সাহায্য করেন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন বলে জানান তিনি।


তিনি আরো বলেন, মানত, আবেদন, শক্তির জন্য খ্রীষ্টভক্তরা এখানে আসেন । এটি একটি আধ্যাত্মিক অনুভূতি। ঈশ্বরের কাছে চিৎকার ও আর্তনাদ ভক্তরা ঈশ^রের নিকট অনেক কিছু চান। আর ঈশ্বর ভক্তদেও কথা শোনেন এবং আশীর্বাদ করছেন বলে আশা করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রত্যেকের নতুন একটি পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই এই তীর্থে এসে নিজেদের পাপশিকারের মাধ্যমে নিজেদের নতুন ভাবে আবিস্কার করতে হবে। আর এই তীর্থ যাত্রায় সবাই পবিত্র হয় বিধায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্রীষ্টভক্তরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় এখানে আসেন নিজেদের নতুন ভাবে আবিষ্কার করার জন্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।


তিনি আরো বলেন, মায়ের প্রতি যেন আমরা আরও বেশি বিশ্বাসী হই এবং রোজারি মালা প্রার্থনা করি। যেন ঈশ্বরের কৃপা ও আশির্বাদ ভক্তরা মায়ের মধ্যস্থ্যতা লাভ করতে পারেন। নিজেদের আত্মার পরিত্রানের জন্য মা মারিয়ার মদ্ধস্থতায় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি ।


তীর্থস্থানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্রীস্টবিশ্বাসী উপস্থিত হয়েছেন। কেউ এসে তার মনোবাসনা পূরণ হওয়ায় মা মারিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপহার সামগ্রী ও মানত দিচ্ছেন। আবার কেউ মানত রাখছেন পরিবার, ব্যক্তি, সমাজ বা কোনো হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে এবং অসুস্থতা থেকে সুস্থতা লাভের আশায়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জেভার্স রোজারিও, পাল-পুরোহিত ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেলসহ অন্যান্য ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার, গীর্জা মাস্টার ও অতিথিবৃন্দ।


উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এই গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামের খ্রীষ্টান ধর্মের অনুসারীরা মিশনে যেয়ে মা মারিয়ার মুর্তির নিকট প্রাণ বাঁচানোর আবেদন করেন। তারা বিশ্বাস করেন তাদের অনুরোধে আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে তারা সবাই রক্ষা পান। এই বিশ্বাস থেকে প্রতি বছর ১৬ জানুয়ারী এই দিনটি স্মরণ করে আসছে খ্রীষ্টান ধর্মের অনুসারীরা। এখানে আগত ভক্তরা এটাই বিশ্বাস করে প্রতিবছর এখানে আসেন প্রার্থনা ও দান খয়রাত করেন।


শেয়ার করুন