২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৭:০৯:৫৬ অপরাহ্ন
জাগৃকে অনিয়ম-দুর্নীতি: শাস্তির নথি নড়ছে
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১০-২০২৩
জাগৃকে অনিয়ম-দুর্নীতি: শাস্তির নথি নড়ছে

অনিয়ম-দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সই জাল করার অভিযোগ রয়েছে; কিন্তু ১৫-১৬ বছর ধরে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছিল না। এ-সংক্রান্ত নথি চাপা দিয়ে রেখেছিল শক্তিশালী একটি চক্র। কিন্তু এবার সেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। জাগৃকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্রমতে, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও শাস্তির বাইরে থাকা ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রকৌশলীও আছেন। প্রাথমিকভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাঁরা নথি আটকে রেখে দিব্যি আছেন।


জাগৃকের চেয়ারম্যান খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল রোববার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিভাগীয় মামলার ফাইলগুলো ধামাচাপা ছিল। এখন পর্যন্ত এমন ১২ জনের বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। সেখানে কাগজপত্রের ঘাটতি আছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করার পর তিনি বদলি হলে আর কাউকে দায়িত্ব না দেওয়া এবং শোকজের জবাবের পর আর কোনো কার্যক্রম চালু না করার মতো বিষয় উঠে এসেছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে ওই ১২ জনের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’


জাগৃক সূত্রে জানা যায়, অফিস সহকারী কাজী নিজাম জনকল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নথি গোপন করে রাখেন ৭ বছর ১১ মাস ১৮ দিন। এ অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৮ আগস্ট বিভাগীয় মামলা করে কর্তৃপক্ষ; কিন্তু ১৬ বছরেও মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। মোহাম্মদপুরে সরকারি জামিলা আইনুল আনন্দ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির টাকা সময়মতো জমা না দেওয়ায় সরকারের ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৩১৩ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এই অপরাধে জাগৃকের ক্যাশিয়ার মো. বদরুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ মার্চ বিভাগীয় মামলা করা হয়। আট বছর ধরে এ মামলার নথি নড়েনি। এবার বিচারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।


সূত্রমতে, শাস্তির মুখে পড়তে যাওয়া অন্যরা হলেন—অফিস সহায়ক হাফিজ আল হোসাইন, অফিস সহকারী শাহজাহান সরকার, চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মেহেদী হাসান, হিসাব সহকারী মোস্তফা হোসাইন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দীপক কুমার সরকার, উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মাহমুদুর রহমান, অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর শওকত আহমেদ, উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মুসাব্বিবাল আসবাব ও অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বীণা রানী সাহা।


এ বিষয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রয়েছে। তবে তা সঠিক নয়।’


অফিস সহকারী শওকত আহমেদ বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। কর্তৃপক্ষ এখন যা ভালো মনে করেন, করতে পারেন। আমি তাঁদের ওপর সব ছেড়ে দিচ্ছি।’


জাগৃকের উপপরিচালক মুশফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় যাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছিল, তাঁদের বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করতেই একসঙ্গে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। 


শেয়ার করুন