২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০৩:৫১:৩৬ পূর্বাহ্ন
পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে শক্তিধর তিন দেশে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৯-২০২৩
পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে শক্তিধর তিন দেশে

রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন—এই তিন দেশের পারমাণবিক পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোয় সাম্প্রতিক কয়েক বছরে নতুন স্থাপনা নির্মাণ ও সুড়ঙ্গ খনন বেড়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন। তাদের কাছে এসম্পর্কিত বিশেষ স্যাটেলাইট চিত্র আছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। এমন এক সময়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেড়েছে, যখন পারমাণবিক শক্তির অধিকারী প্রধান তিন দেশের মধ্যে কয়েক দশকের উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।


যদিও এর অকাট্য প্রমাণ নেই যে দেশ তিনটি আসন্ন কোনো পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে একজন পরমাণু বিস্তার রোধবিষয়ক বিশেষজ্ঞের পাওয়া ও সরবরাহ করা ওই চিত্রগুলো স্পষ্টতই ইঙ্গিত দেয়, মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ওই তিন দেশে তিনটি পারমাণবিক নিরীক্ষাকেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।


এর মধ্যে চীন পরিচালিত সুদূর পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের একটি, রাশিয়া পরিচালিত আর্কটিক মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জের একটি এবং যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত নেভাদা মরুভূমির একটি পারমাণবিক কেন্দ্র রয়েছে।


গত তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে পাওয়া স্যাটেলাইটে চিত্র বিশ্লেষণ করে মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জেমস মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক জেফরি লুইস জানিয়েছেন, গত তিন থেকে পাঁচ বছরে পাহাড়ের নিচে নতুন সুড়ঙ্গ, নতুন রাস্তা এবং সংরক্ষণসুবিধার পাশাপাশি পারমাণবিক কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে গাড়ি আসা-যাওয়া বেড়েছে। 

জেফরি লুইস বলেন, ‘সত্যিই আমরা যথেষ্ট ইঙ্গিত পাচ্ছি—রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র আবার পারমাণবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাড়াচ্ছে, ১৯৯৬ সালে কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট ব্যান ট্রিটিতে ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে যা দেখা যায়নি।’ ওই চুক্তিতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সই করেছে, তবে সেটি তারা অনুমোদন করেনি।


সাবেক গোয়েন্দা বিশ্লেষক মার্কিন বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সেড্রিক লেইটন, তিন দেশের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর চিত্র পর্যালোচনা করেছেন এবং একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।


লেইটন বলেন, এটা স্পষ্ট যে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো আধুনিকায়নে কেবল প্রচুর সময়, প্রচেষ্টা ও অর্থই ব্যয় করেনি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডও বাড়িয়েছে।


এদিকে মস্কো চুক্তিটি অনুমোদন করেছে বটে, তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ফেব্রুয়ারিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রথমে পারমাণবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাসংক্রান্ত পদক্ষেপ বাড়ায়, তাহলে তাঁরাও বাড়াবেন।


বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওয়াশিংটন এবং দুই কর্তৃত্ববাদী সরকারের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের সময়ে এই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ নতুন এক প্রতিযোগিতার জন্ম দিচ্ছে। যদিও তাতে বাস্তবিক সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা আছে, এমনটা মনে করেন না তাঁরা।


শেয়ার করুন