২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:২১:৩১ পূর্বাহ্ন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহজ করেছে যেসব কাজ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৮-২০২৩
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহজ করেছে যেসব কাজ

প্রযুক্তিপাড়ায় এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসমৃদ্ধ নতুন নতুন অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইট। সেগুলো কাজে লাগিয়ে যেসব কাজ করা যায়, তার তালিকা বিশাল। সেই সব অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইট কাজে লাগানোর আগে জেনে নিন, সেগুলো দিয়ে আপনি কী কী করতে পারেন।


ই-মেইল 

ই-মেইল লিখতে বসলে প্রায়ই কী লিখতে হবে, কেমন করে লিখতে হবে, যথার্থ শব্দ না খুঁজে পাওয়ার সমস্যা আছে। অথবা অনেক সময় ইংরেজি ভাষাটা না জানার কারণে ই-মেইল লেখা হয়ে ওঠে না। এসব সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে কোনো বিশেষ প্রচেষ্টা ছাড়াই ই-মেইল লেখা ও পাঠানো সম্ভব।


ছবি আঁকা 

অদেখা কোনো মানুষ বা ঐতিহাসিক কোনো ব্যক্তিত্বের ছবি এখন অবিকল আঁকা সম্ভব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে। এমনকি রাজধানী ঢাকায় বরফ পড়লে কেমন দেখাবে—এমন কল্পনাকেও ছবিতে মূর্ত করে তুলতে পারবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সঠিক নির্দেশনা দিলে এঁকে দেবে পছন্দসই যেকোনো বিষয়ের ছবি। 


গান লেখা ও সুর দেওয়া

গান ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া হয়তো কঠিন। কেউ গান লিখতে পারেন কিন্তু সুর করতে পারেন না, সেই আক্ষেপও দূর করে দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কেউ চাইলে গান লিখে দেওয়াই শুধু নয়, গানে সুরও দেবে এই আধুনিক প্রযুক্তি।


প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন পণ্যের ফটোগ্রাফি নিয়ে বেশ ভুগতে হয়। উদ্যোক্তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তাঁদের সাদামাটা একটি ছবি আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।


সংবাদ খুঁজে বের করা

হাজারো ব্যস্ততার ভিড়ে প্রয়োজনীয় সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ইন্টারনেটে উন্মুক্ত সংবাদ থেকে প্রয়োজনীয় সংবাদগুলো খুঁজে বের করে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা যায় সহজে। পাঠক চাইলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদের মূল ঘটনাও সংক্ষেপে জেনে নিতে পারেন।


ভিডিও কনটেন্ট তৈরি

ক্যামেরার সামনে কথা বলায় অনেকেরই দুর্বলতা থাকে। তা ছাড়া সাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ডসহ নিখুঁত ভিডিও বানানো বেশ সময়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। শুধু স্ক্রিপ্ট লিখে দিলেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চরিত্রসহ আকর্ষণীয় ভিডিও বানিয়ে দেয়। প্রয়োজনে নিজের চরিত্রও ব্যবহার করা যায়।


ব্যবসায়িক পরিকল্পনা

ব্যবসা ও বিপণন পরিকল্পনা এবং স্ট্র্যাটেজি, কাস্টমার জার্নি, ফানেল বিল্ডিংসহ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রয়োজনীয় প্রায় সব কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করা সম্ভব।


উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায়

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার কাজে অনেক গবেষণাপত্র নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়। কিন্তু এগুলো ভিন্ন ওয়েবসাইটে থাকায় এবং অধিকাংশই পেইড হওয়ায় তা পড়া কষ্টকর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কেবল বিষয়ের নাম জানিয়ে দিলে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় উন্মুক্ত সব গবেষণাপত্র সংগ্রহ করে দেয়। 


স্বাস্থ্যসেবায়

হৃদ্‌রোগসহ ডিমেনশিয়া, মাল্টিপল স্কলেরোসিস, পারকিনসনস, আলঝেইমার, এমনকি সিজোফ্রেনিয়ার মতো রোগও প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা যায় এই প্রযুক্তির মাধ্যমে।


মিটিং সামারি

জুম, মিটসহ যেকোনো অনলাইন মিটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোট করে রাখতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মিটিং সামারি তৈরি এবং তা সংশ্লিষ্টজনকে মেইল করার সুবিধাও মিলছে এখন।


মার্কেটিং

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ইউজার ও কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স, প্রোডাক্ট, মার্কেটিং ইত্যাদি অ্যানালাইসিসের কাজগুলো বাড়তি খাটুনি ছাড়াই করে ফেলা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গবেষকদের জন্যও 

এটি সহায়ক।


কণ্ঠ ও সংগীত পৃথক করা

বিভিন্ন গান, ক্লিপের টিউন কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভালো লাগলে আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পছন্দ করি, কিন্তু সেগুলোর সঙ্গে কারও না কারও কণ্ঠ জড়িয়ে থাকে বলে তা করা সম্ভব হয় না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে অডিও ক্লিপের মিউজিক আর ভয়েস সহজেই আলাদা করা যায়। 


প্রোফাইল তৈরি

প্রফেশনাল জীবনে একটি সাজানো লিংকডইন প্রোফাইলের বিকল্প নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিংকডইনের জন্য কনটেন্ট তৈরি, শিডিউল অনুযায়ী তা পোস্ট এবং যোগাযোগ বাড়াতে সহায়তা করে।


সফটওয়্যার ডেভেলপ

সফটওয়্যার ডেভেলপারদের জন্য কোড লেখা একটি জরুরি কাজ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে প্রয়োজনমতো নির্দেশনা দিলে কোড লেখার কাজটি সে নিজেই করতে থাকে।  


ডিজাইন

আমাদের অনেককে প্রায়ই টুকটাক গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করতে হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ডিজাইনের দক্ষতা ছাড়াই শুধু কয়েক লাইন লিখিত নির্দেশনার মাধ্যমে অসাধারণ সব ডিজাইন করা যায়।


কপিরাইট ফ্রি মিউজিক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শর্টস, রিলস ও ভিডিওর জন্য চাইলেই নিত্যনতুন মিউজিক বানানো সম্ভব। বানানো মিউজিক ব্যবহারে কপিরাইটের ঝামেলাও নেই। এসব ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গল্প বা ব্লগ লেখা যায়, ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার তৈরি করা যায়, কিংবা চাইলে পডকাস্ট এবং ভিডিওর অডিও থেকে নয়েজ দূর করা কিংবা সাউন্ড ক্লিয়ার করতেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া যায়। 


শেয়ার করুন