২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০৭:২৭:০৫ অপরাহ্ন
রাজপথে ফের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৭-২০২৩
রাজপথে ফের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ঘনীভূত হচ্ছে রাজনৈতিক সংকট। নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দলের অনড় অবস্থানে আপাতত সংলাপের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। দাবি আদায়ে রাজপথকেই বেছে নিয়েছে বিএনপি। বুধবার ঘোষণা করবে সরকার পতনের একদফা। নয়াপল্টনে বিশাল শোডাউনের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপে নামতে চায় দলটি। অন্যদিকে বিএনপির একদফার আন্দোলনকে পাত্তাই দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন ও তাদের মিত্ররা। একদফার ঘোষণাকে গতানুগতিক আখ্যা দিয়ে তা মোকাবিলায় পালটা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে তারাও।


একদফার ঘোষণাকে ‘গতানুগতিক’ বলছে আ.লীগ


বিএনপির একদফার আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত নয় ক্ষমতাসীনরা


বিএনপির একদফার আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত নয় ক্ষমতাসীনরা। বিরোধী পক্ষের আন্দোলনের এই ঘোষণাকে ‘গতানুগতিক’ আখ্যায়িত করে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও আদর্শিক মিত্র ১৪ দলের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। রোববার নেতারা যুগান্তরকে বলেছেন, এটা (একদফা আন্দোলনের ঘোষণা) আমাদের কাছে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা নয়। এটি একটি গতানুগতিক ঘোষণা। তারা তো আগে থেকেই আন্দোলন করে আসছে। বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনের পালটা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তারা।


শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় একদফার আন্দোলন ঘোষণার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। দলটির নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছেন, ১২ জুলাই একদফার আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্থায়ী কমিটির ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানোর অভিন্ন দাবিতে বিএনপির মিত্ররাও আলাদা মঞ্চ থেকে একদফার এই আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে।


বিএনপির এই আন্দোলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে শনিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা একটা ঢেউও তো জাগাতে পারেনি। ৩২ দলের এই জগাখিচুড়ির ঐক্যে একদফার আন্দোলনের পতন অনিবার্য। যে লক্ষ্য নিয়ে জগাখিচুড়ির এই ঐক্য তাতে ফল আসবে অশ্বডিম্ব। তিনি দাবি করেন, সরকার যেমন আছে, তেমনই থাকবে। সেতুমন্ত্রী পালটা প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, তাদের আন্দোলনে নেতা কে? ক্যাপ্টেন ছাড়া কি জাহাজ চলবে? এই জগাখিচুড়ি ঐক্যে দফায় দফায় পরিবর্তন হয়েছে। এই ৩২ দল টিকবে কি না, এর গ্যারান্টি নেই। আগে তো ছিল ৫৪ দল।


এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আগস্ট মাসকে সামনে রেখে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের নামে কেউ যদি হত্যার পরিকল্পনা করে, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে জনগণের যদি সম্পৃক্ততা না থাকে, সেই আন্দোলন কখনো সফল হয় না। তারা যে একদফার আন্দোলনের কথা বলছেন, জনগণ তো ইতোমধ্যেই তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। কোনো আন্দোলনেই জনগণ তাদের সহযোগিতা করছে না। বছরের পর বছর তারা আন্দোলনের কথা বলছেন, অমুক দিন তমুক দিন করবেন। সেটা আমরা দেখেই আসছি।


জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু একদফার আন্দোলনের ঘোষণার ব্যাপারে রোববার যুগান্তরকে বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনে বিএনপির একদফার আন্দোলনের ঘোষণাটি ভয়ংকর রাজনৈতিক অপরাধমূলক একটি প্রস্তাব। কারণ এই প্রস্তাবের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দুর্যোগ ডেকে আনবে। আমরা এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব।


ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন আলোচনার পথ খোলা আছে। তারপর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল রাজপথেই সরকারের পরিবর্তন ঘটানো হবে। কিন্তু বিএনপি সেটা করতে পারেনি। এবারও তারা সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। তাই আমি মনে করি, এটা একটি গতানুগতিক ঘোষণা।


১৪ দলের আরেক শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির একদফার আন্দোলনের এই ঘোষণাকে আমরা এমন কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা মনে করছি না। তারা তো এমন কোনো আন্দোলন তৈরি করতে পারেনি যে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে। আসলে এই ধরনের ক্ষমতা এখন বিএনপির নেই। তাদের জন্য সরকারের পতন ঘটানো একটি দুরূহ ব্যাপার।


এদিকে সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক রোববার যুগান্তরকে বলেছেন, তারা মনে করেন, নির্বাচন এলেই এই ধরনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি দেশে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, তাতে লাভ হয়েছে কি? ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে সর্বশেষ ডিসেম্বর পর্যন্ত যত আন্দোলন করেছে বিএনপি, সবই একদফার ছিল। তাই এটি নতুন কিছু নয়। তারা বলছেন, রাজপথের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে যা যা করণীয়, সবই করবে আওয়ামী লীগ। বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির বিপরীতে তারাও (আওয়ামী লীগ) পালটা কর্মসূচি দেবে।


এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির এই ধরনের (সরকার পতনে একদফার আন্দোলন) আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণায় আমরা চিন্তিত নই। তাদের (বিএনপির) যখন যে ধরনের কর্মসূচি আসবে, তা দেখে পালটা কর্মসূচি দেওয়া হবে।


শক্তির জানান দিয়ে বিএনপির একদফার ঘোষণা


নির্বাচনকালীন সংকট বিদেশিদের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত


আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। ১২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করবে দলটি। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় ওই সমাবেশে বিশাল শোডাউনের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। একদফার ঘোষণার দিনই নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চান তারা। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দল গোছানো ও নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ সেই বার্তাও দেওয়া হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট সংকট বিদেশিদের কাছে ফলাও করে তুলে ধরতে চায় বিএনপি। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরকালেই ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে একদফার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে দলটি। সরকার পতনে ৩৬টি দল রাজপথে নেমেছে সেই বার্তাও তাদের দিতে চায়।


সমাবেশকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে প্রস্তুতিসভা। ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত জেলাগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিগত নির্বাচনে ঢাকা বিভাগের অধীন প্রতিটি সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রথম দুজন প্রার্থীকে নিয়ে রোববার বৈঠক করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। সেখানে সংশ্লিষ্ট নেতাদের ঢাকার সমাবেশে সর্বোচ্চ লোক সমাগমের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে মহানগরের প্রতিটি থানাকে সমাবেশে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ঘটানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলায় নির্দেশ না দিলেও অনেকেই সমাবেশে যোগ দেবেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


এদিকে একইদিন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দল ও জোট আলাদা আলাদা মঞ্চ থেকে সরকার পতনের একদফার ঘোষণা দেবে। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে সমাবেশের স্থান ও সময় চূড়ান্ত করেছে। বিগত সময়ে সমমনা দলগুলো যেখানে কর্মসূচি পালন করেছে এবারও তারা প্রায় একই স্থান থেকেই একদফার ঘোষণা দেবেন। তবে জামায়াতে ইসলামী ওইদিন একদফা ঘোষণা দেবেন কিনা তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, ওইদিন ঘোষণা না দিলেও তারা একদফাকে সমর্থন জানাবে। একইদিন না হলেও দাবি আদায়ে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে তারা।


জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী সমমনা ১১ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ যুগান্তরকে বলেন, বুধবার বিজয়নগর কালভার্ট রোডে সমাবেশ থেকে একদফার ঘোষণা করা হবে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মসূচি শেষ করা হবে।


একদফা ঘোষণার আগে আজ গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি ও লেবার পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করবে বিএনপি। সেখানে একদফার পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বসে একদফার কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। কর্মসূচি নিয়ে দুই ধরনের মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, বিদেশিরা দেশে থাকতে ঘেরাওয়ের মতো বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়া উচিত। তবে এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে অনেকে বলছেন, শুরুতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পর আবার বিক্ষোভ সমাবেশ কিংবা অনশন দেওয়া হলে তা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।


জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগান্তরকে বলেন, বর্তমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে এ সরকারের পতন। সেই লক্ষ্যে কয়েকদিনের মধ্যে একদফার আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। সাধারণ জনগণ এবার সেই আন্দোলনে অংশ নেবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারকে জনগণ বাধ্য করবে।


বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যুগান্তরকে বলেন, ব্যাপক শোডাউনের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ সফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষও যাতে ওই সমাবেশে যোগ দেয় সেই লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, জনগণ যেমন সব ক্ষমতার উৎস, তেমনি গণআন্দোলনের মুখে কোনো স্বৈরাচার সরকার টিকতে পারেনি। গণআন্দোলনের মুখে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাব না-ওইদিন সবাই এমন শপথই নেবেন।


মহানগরের বিভিন্ন স্তরের নেতারা জানান, বুধবারের সমাবেশ ঢাকা মহানগর বিএনপির দুই ইউনিটের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। একদফার আন্দোলনে এবার ঢাকাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচি সফলে মহানগর বিএনপিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। একদফার আন্দোলন ঘোষণার দিন সেই রিহার্সেলের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। সমাবেশে ব্যাপক শোডাউনে মহানগর বিএনপি দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। রোববার প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। বুধবারের সমাবেশে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দেওয়া হয় নানা পরামর্শ। আজ থেকে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করবে মহানগর নেতারা। সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে উপস্থিত থাকতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রিকশা ও সিএনজিযোগে মাইক ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে।


জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক যুগান্তরকে বলেন, বুধবারের সমাবেশে ঢাকা উত্তর থেকে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। সবাই যাতে সমাবেশে আসে তা কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে।


বুধবারের সমাবেশ ঘিরে শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তাই সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় ঢাকা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যারা ঢাকায় ছিলেন তারা সমাবেশ শেষ করে বাড়ি ফিরবেন। জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিন সন্ধ্যায় যুগান্তরকে বলেন, সমাবেশে অংশ নিতে রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দিচ্ছি। এ জেলা থেকে আরও অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে ঢাকার সমাবেশে অংশ নেবে।

সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মামলা-হামলার প্রতিবাদে কয়েক বছর ধরে রাজপথে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। স্থানীয় সরকার ও উপনির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেড় বছর ধরে সব ধরনের ভোট বর্জন করে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এমনটা জানিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, এমনকি তা প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকার দাবি মেনে না নিলে রাজপথে ফয়সালার হুঁশিয়ারি দেন তারা। সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে ২০ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে ডান-বাম ও ইসলামপন্থি দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়া ও যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। ২৪ ডিসেম্বর প্রথম কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে সমমনা দলগুলো। এরপর ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। এখন পর্যন্ত ৩৬টি দল বিএনপির সঙ্গে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে।


শেয়ার করুন