২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১১:০০:১৯ পূর্বাহ্ন
সীমান্তে গরু পাচারে ব্যবহার হচ্ছে শিশুরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৫-২০২৩
সীমান্তে গরু পাচারে ব্যবহার হচ্ছে শিশুরা

অপরাধমূলক কাজে শিশুদের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে শিশু-কিশোরদের দিয়ে নানা অপরাধ করানোর অভিযোগ রয়েছে। এবার ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত থেকে চোরাই গরু আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু-কিশোরদের। 

কক্সবাজারের রামু ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার প্রভাবশালী গরু চোরাকারবারি চক্র টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মাঠে নামিয়েছে শিশুদের। এতে করে শিশু-কিশোররা স্কুলগামী না হয়ে ঝরে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিন রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ ইনজেকশনের প্রভাবে দ্রুতগতিতে দৌড়াচ্ছে গরু। আর পেছনে রশি ধরে দৌড়াচ্ছে শিশু-কিশোররা। যাদের অধিকাংশের বয়স ১৮ বছরের মধ্যে। এ চিত্রগুলো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার। প্রতিটি গরু গন্তব্যে পৌঁছে দিলে ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা কামাই। মাত্র ১-২ ঘণ্টার শ্রম। এমন প্রলোভন দেখিয়ে শিশু-কিশোরদের জড়ানো হচ্ছে চোরাই গরু পাচারে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বয়ষ্ক শ্রমিকদের চেয়েও শিশু-কিশোরদের কম টাকা, সময় ও নিরাপদ মনে করছেন চোরাকারবারিরা। শিশু-কিশোরদের ব্যবহারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়ানো সহজ। এ অপরাধে জড়িয়ে পড়ার পেছনে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের।

সচেতন নাগরিকদের মতে, সীমান্তের শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া না গেলে অল্প বয়সে অর্থের লোভ পেয়ে আরও বড় ধরনের চোরাচালানের নেশায় আসক্ত হয়ে নষ্ট হবে শিশুর ভবিষ্যৎ।

অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে শত শত দরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোরদের জড়ানো হচ্ছে গরু পাচারে। এসব শিশুর মধ্যে কেউ মিয়ানমার সীমান্তে যাচ্ছে গরু আনতে, আবার কেউ রামুর হাজিরপাড়া, মৌলভীরকাটা, চাকমারকাটা, ডাক্তারকাটা, ফাক্রিকাটা, ঢাকভাঙা ও নাইক্ষ্যংছড়ির রূপনগর সড়ক ব্যবহার করে চোরাই গরু পৌঁছে দিচ্ছে গন্তব্যে। 

সরেজমিন অনুসন্ধানকালে এসব শিশু ক্যামেরা দেখলেই দৌড়ে পালিয়ে যায়, কেউ মুখ ঢেকে সটকে পড়ে। তবে শিশুরা গরু পাচারে সম্পৃক্ত এমন তথ্য জানা নেই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিশুরা এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে হয়তো, তবে তার উপজেলায় এই সংখ্যা খুবই কম। 

অন্যদিকে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, প্রত্যেক শিশুর দায়িত্ব পরিবার ও সমাজের ওপর রয়েছে। অপরাধে শিশুরা জড়িয়ে পড়ার দায় সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের ওপরও রয়েছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শেয়ার করুন