২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৫৪:০৭ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে আবারও জমিতে পানি না পেয়ে বিষপানে কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৪-২০২৩
রাজশাহীতে আবারও জমিতে পানি না পেয়ে বিষপানে কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বোরো ধানের খেতে সেচের পানি না পেয়ে আবারও এক আদিবাসী কৃষক বিষপান করে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গত রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই কৃষকের নাম মুকুল সরেন (৩৫)। তার বাড়ি উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে।

পরে উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুকুল সরেন জানান, সেচের পানির জন্য তিনি এক সপ্তাহ ধরে ঘুরছেন। কিন্তু নলকূপ অপারেটর হাসেম আলী বাবু তার জমিতে পানি দিচ্ছিলেন না। রোববার দুপুরে তিনি আবার পানির জন্য যান। তখন বাবু তাকে এক বোতল বিষ দেন এবং এটা বাবুর জমিতেই দিয়ে আসতে বলেন। এ সময় মুকুল বলেন, পানি না দিলে তিনি এই বিষ খাবেন। তারপরও তার জমিতে পানি দেওয়া হয়নি। তখন তিনি বিষ পান করেন। দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, তিনি শুনেছেন যে রোববার দুপুরে মুকুল পানি না পেয়ে বিষের বোতল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন আর আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। তবে বিষপান করেছেন কি না তা তিনি জানেন না।

চেয়ারম্যান জানান, মুকুল তার জমিতে পানি পাচ্ছেন না বলে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিলেন। একবার এক ইউপি সদস্যকে তার জমি দেখতে পাঠানো হয়। তিনি দেখে এসে বলেছিলেন যে, জমিতে কয়েকদিন পরে পানি দিলেও চলবে।

মুকুলের বিষপানের বিষয়ে জানতে চাইলে গভীর নলকূপের অপারেটর হাসেম আলী বাবু বলেন, কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হয়েছে। তখন কেউ পানির জন্য আসেননি। এখন সবাই এক সঙ্গে আসছেন। সবাইকে তো এক সঙ্গে পানি দিতে পারব না।

মুকুল আমাকে বলেন, পানি দিবি না তোকে সাখাওয়াতের মতো (আগের নলকূপ অপারেটর) জেল খাটাব। তখন তার হাত থেকে একজন বিষের বোতল কেড়ে নেন। আমি বললাম, পানি দিচ্ছি, তুমি জমিতে যাও। তারপর তিনি চলে যান। পরে বিষ খেয়েছে কি না জানি না।

গভীর নলকূপ থেকে পানি না পেয়ে গতবছর বিষপান করে দুই কৃষক আত্মহত্যা করলে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তৎকালীন গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা করা হয়। এরপর সাখাওয়াত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এখন তিনি জামিনে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। ওই ঘটনার পর কৃষক লীগ নেতা সাখাওয়াতকে বাদ দিয়ে নতুন করে হাসেম আলীকে অপারেটর নিয়োগ দেয় বিএমডিএ।

এবারও কৃষকের বিষপানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, গত বছরের ঘটনার পর তো ওই ডিপের অপারেটরকে বাদ দেওয়া হয়। আবার কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল? আমি হাসপাতালে গিয়ে এ ব্যাপারে কৃষক মুকুল সরেনের সঙ্গে কথা বলব।’

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক জানান, খবর পেয়ে রাতেই তিনি হাসপাতালে যান। তার সব চিকিৎসার খরচ বহনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এসময় মুকুল জানিয়েছেন, পানি না পেয়ে তিনি বিষপান করেছেন।

শেয়ার করুন