পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ -এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং শেখ রেহানাকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলার অপর ১৪ আসামিকেও পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন, বিবিসি, স্কাই নিউজসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানও এ সময় আদালত এলাকায় ছিলেন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর প্রভাব ব্যবহার করে মা শেখ রেহানা, বোন আজমিনা সিদ্দিক ও ভাই রাদওয়ান মুজিবের জন্য পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন। তবে এই মামলায় কেবল রেহানার প্লট বরাদ্দের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আজমিনা ও রাদওয়ানকে আসামি করা হয়নি; তাঁদের বিরুদ্ধে দুদকের অন্য দুটি মামলা চলছে।
হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপ ছাড়া এই মামলার অন্য ১৪ আসামি হলেন, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক চার সদস্য- মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ও মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী; রাজউকের সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। ১৭ আসামির মধ্যে খুরশীদ আলম কারাগারে আছেন।
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের জেরে বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হলে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি পদে থাকা টিউলিপ সিদ্দিকও সমালোচনার মুখে গত ১৪ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন।
