১৯ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৮:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : বিএনপি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২৫
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : বিএনপি

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছেন তাতে ‘ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে মনে করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। গতকাল সোমবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন।


তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা ছিল যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী ও নৃশংস, জঘন্য হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যায় অপরাধের বিচার করা হয়।’


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আজ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দুই দোসরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়েছে।


এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আইনের বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে। পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার কারণে প্রাপ্য সাজা কমিয়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি এ ব্যাপারে জনগণকে সদা সর্বদা সচেতন থাকার আহবান জানাচ্ছে।


 একই সঙ্গে বিএনপি অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচারের দাবি জানাচ্ছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিং করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু  মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।


এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নেই।’


গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগে তিনি নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।


রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই অবৈধভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাদের দাঁড়াতেই হবে। আরো যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা করি।’


সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা অনুকরণীয় শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে। প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে টিভিতে সরাসরি রায়ের ঘোষণা দেখেন সালাহউদ্দিন আহমদ।


শেয়ার করুন