নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে, কিন্তু এর রেশ এখনো কাটেনি। ২ নভেম্বর মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে নতুন চ্যাম্পিয়ন পায় বিশ্ব ক্রিকেট। দর্শক উপস্থিতি ও সম্প্রচার রেকর্ডে এবারের আসর ছাড়িয়ে গেছে সব আগের আয়োজনকে। এই রেকর্ডগড়া আসরের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামী বিশ্বকাপগুলোতে দল সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের শেষ দিনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২৫ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিল ৮ দল, কিন্তু ২০২৯ সালে অংশ নেবে ১০ দল। ম্যাচ সংখ্যা বাড়বে ৩১ থেকে ৪৮-এ। আইসিসি এক বিবৃতিতে জানায়, ‘নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের অসাধারণ সাফল্যের পর বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী টুর্নামেন্টগুলো আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে।’
ভারত-শ্রীলঙ্কায় হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত এবারের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন চ্যাম্পিয়ন পাওয়ার ম্যাচে জয় পায় ভারত, হারমানপ্রীত কৌরের দল ৫২ রানে হারায় প্রোটিয়াদের। দেশের মাঠে মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতে। আইসিসির হিসাব অনুযায়ী, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ৪৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষ খেলা দেখেছেন, আর মাঠে উপস্থিত ছিলেন প্রায় তিন লাখ দর্শক—যা নারীদের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিক। ফাইনালটি সরাসরি দেখেছেন ২ কোটি ১০ লাখ দর্শক।
কানেক্টেড টিভি প্ল্যাটফর্মে খেলা দেখেছেন আরও ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ, যা ছুঁয়েছে ২০২৪ সালের পুরুষদের ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের রেকর্ড দর্শকসংখ্যা।
আইসিসির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভারতে নারী ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ডিজিটাল ও সম্প্রচার উভয় মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫০ কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে।’
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পরিবর্তন আনছে আইসিসি। আগামী বছর ইংল্যান্ডে হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ১২ দল, যেখানে ২০২৪ সালে খেলেছিল ১০ দল।
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে এর আগে সবচেয়ে বেশি দল অংশ নিয়েছিল ১৯৯৭ সালে—তখন ছিল ১১ দল, আয়োজকও ছিল ভারত। সেই আসরে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ২০০০ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত প্রতিটি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপেই দল ছিল ৮টি। এবার ২০২৯ সাল থেকে নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে নারীদের ক্রিকেট।

