জুস খাইয়ে ৯ শিক্ষার্থীকে অনশন ভাঙালেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। নিরাপদ ক্যাম্পাস, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দাবিতে গত বুধবার দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে উপাচার্য তাদের যৌক্তিক দাবি মানার আশ্বাসে ৫২ ঘণ্টা পর অনশন কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেন তারা।
অনশন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক ও অনশনরত শিক্ষার্থী জশদ জাকির বলেন, উপাচার্য আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের কোনো দাবিই অযৌক্তিক নয়।
তিনি আগামী রবিবার বিকেল ৩টায় আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনায় বসবেন। সে কারণেই আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘আমরা আগামী রবিবার অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। তারা আমাদের সঙ্গে বসতে রাজি হয়েছে।
আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন—চবি শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক জশদ জাকির, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক নাঈম শাহ জান এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের আহ্বায়ক ধ্রুব বড়ুয়া, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুদর্শন চাকমা, বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র এবং স্পোর্টস সাইন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী রাম্রা সাইন মারমা।
তাদের সাত দাবি হচ্ছে—আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান। নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা কর এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ কর।
উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা। বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা। সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।